আমন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক

ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা আমন ক্ষেত পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন । তবে মৌসুমের শুরুর দিকে পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না। পানির অভাবে যেসব জমিতে চারা রোপন করা হয়েছিল তার বেশির ভাগ ধানক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এতে করে মারাত্মক সমস্যায় পড়েন এ জেলার কৃষকেরা

।এ অবস্থায় সম্প্রতি বেশ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ফলে আমনের ক্ষেতে পানি জমেছে। বিশেষ করে উঁচু জমিতে পানি জমায় চাষিদের মনে স্বস্তি এসেছে। শুকিয়ে যাওয়া আমন ক্ষেতের চারা সতেজ হয়ে মাঠের পর মাঠ এখন সবুজের সমারোহ। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের মিলনমেলা। আমনের মাঠ যেন সবুজে ঢাকা প্রকৃতি। চারদিকের এই নয়নাভিরাম দৃশ্য কৃষকের মনে দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। কয়েকদিন ধরে ভারি মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও আবহাওয়া খুব বেশি প্রতিকূলে না গেলে উত্তরের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত ঠাকুরগাঁও এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন। পানি নিয়ে কৃষকেরা কিছুদিন দুশ্চিন্তায় থাকলেও এখন পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় সে চিন্তা অনেকটা কেটে গেছে।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা, রুহিয়া, শীবগঞ্জ, ভুল্লী, বরুনাগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা আমন রোপন শেষ করে আমনের ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। দীর্ঘদিন পানির অভাব থাকলেও বর্ষার পানিতে তারা নতুন করে আমনে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।

আরো পড়ুন:
জন্মের পরেই তারকা নুসরাতের ছেলে, খোলা হলো ইনস্টাগ্রাম!
ঝালকাঠিতে নারীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ

সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের মণ্ডল পাড়া গ্রামের কৃষক রমজান আলী জানান, প্রত্যেক বছরের মত এ বছর তিনি ৫ একর জমিতে আমন চারা লাগিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় বিপাকে পড়েন তিনি। অবশেষে গেল কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে তার উঁচু জমিগুলোতেও পানি লাগায় তিনি দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছেন।আরেক কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, তিনি এ বছর ৩ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। বৃষ্টির পানির অভাবে তার আমনের ক্ষেত শুকিয়ে যাওয়ায় তার দুশ্চিন্তার যেন শেষ ছিল না।

কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তার আমনের ক্ষেতেও পর্যাপ্ত পানি জমেছে। চারা গাছ এখন বেশ সতেজ হয়ে উঠছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন জানান, এ জেলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছর আমন মৌসুমে কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রদান করা হয়। এ বছরও দেয়া হচ্ছে। তবে পানির অভাবে প্রথমের দিকে সামান্য সমস্যা হলেও বেশ কিছু দিনের টানা বর্ষণের ফলে আমন ক্ষেতে পানি জমেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে।

সেপ্টেম্বর ০১.২০২১ at ১১:৩৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/গকব/জআ