দূর্গাপুরে ১৭ বছর সংস্কার হয়নি একটি কাঁচা রাস্তা: চরম দুর্ভোগে ৩০ হাজার বাসিন্দা

রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের নান্দিগ্রামে প্রায় দেড় কিলোমিটার একটি কাঁচা রাস্তা পাঁকা বা সংস্কার হয়নি ১৭ বছর। ফলে চরম দুর্ভোগে কয়েক গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দার। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে এরই মধ্যে কেটে গেছে ১৭ বছর।

মোহনগঞ্জ হতে তাহেরপুর প্রধান সড়কের মাঝখানে উপজেলার নান্দিগ্রাম মোড় দিয়ে বেশ কয়েকটি গ্রামের লোকের যাতায়াতের একটি মাত্র প্রধান রাস্তা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১৭ বছর ধরে স্থানীয় নেতারা বলে আসছেন রাস্তাটি মঞ্জুর হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও কাজের বাস্তবায়ন হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাগমারা উপজেলার মোহনগঞ্জ হতে তাহেরপুর প্রধান সড়কের মাঝখানে দুর্গাপুর উপজেলার নান্দিগ্রাম মোড়। এই নান্দিগ্রামের মোড় দিয়ে হিন্দুপাড়া পর্যন্ত একটি মাত্র দেড় কিলোমাটারের কাঁচা রাস্তা। এই কাঁচা রাস্তা দিয়েই ৪-৫ গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াত।
রাস্তাটি পাঁকা না হওয়ায় বর্ষাকালে পানি জমে হাঁটু কাদায় পরিণত হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কয়েক গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দার।

রাস্তায় বেশ প্রশস্ত হলেও এতোদিনে নজরে আসে কারও। ফলে দীর্ঘদিন ধরে কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা দুর্ভোগ স্বীকার করে এ রাস্তা দিয়েই চলাচল করছে।

নান্দিগ্রামের কাওসার, আয়নাল, সোহরাফ, মাইনুল, ময়েনসহ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সব জায়গা সরকারের উন্নয়ন হলেও এ রাস্তাটি আজও অবহেলিত। প্রায় ৪-৫ গ্রামের বাসিন্দারা এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। বর্ষাকালে এ রাস্তায় হাঁটু পরিমাণ কাঁদা জমে। গাড়ি ঘোড়া তো দুরের কথা বর্ষাকালে হেটেও যাওয়া যায় না এ রাস্তা দিয়ে।

তারা আরও বলেন, ১৭ বছর ধরে স্থানীয় নেতারা দাবি করে আসছেন রাস্তাটি মঞ্জুর হয়ে গেছে। কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ভোটের সময় আসলেই জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তা করে দিবে বলে অজুহাত খোঁজে। ভোটপার হলে আর কেউ এ রাস্তার কথা মনে করে না। ফলে কষ্ট নিয়ে কয়েক গ্রামের প্রায় ৩০হাজার লোকজন চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে।

ওই এলাকার স্কুল শিক্ষার্থী সুমাইয়া, খাদিজা, রাব্বুল জানালেন, এ রাস্তায় জন্য কয়েক গ্রামের লোকজনের দুর্ভোগের শেষ নাই। বর্ষাকালে এ রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজেও যাওয়া যায় না। তারা বলেন, সামনে আষাড় মাস। যদি জরুরী কোনো রোগী হাসপাতালে নিতে চাইলে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। বর্তমানের ডিজিটাল বাংলাদেশে আমাদের অবস্থা কেন সেই প্রাচীন যুগের অবস্থার মতো থাকবে।

এই গ্রামের সহজ সরল মানুষের প্রশ্ন আর কত বছর অপেক্ষা করতে হবে। বার বার ভরসা দিয়ে ভোট নিয়ে জন প্রতিনিধি হয়। তাঁরপর আর কেউ খোঁজ রাখে না।

স্থানীয় ইউপি সদস্যে আব্দুস সামাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমপি-মন্ত্রীকে বলে রাস্তাটি দেখায়ে আজও পাঁকা করতে পারিনি। কয়েক গ্রামের একটি মাত্র কাঁচা রাস্তা হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে। অজানা কারণে রাস্তাটি না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর দাবি পূরণ করতে পারছি না। তিনি বলেন, এ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে বার বার বলা হয়েছে। প্রকল্প পাঠানোর কথা বলা হলেও তবুও বাস্তবায়ন হয় না।

আরো পড়ুন:
মোজাম্মেলের অচল পায়ে সচল থাকার তীব্র লড়ায়

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান বলেন, ওই রাস্তার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বর্তমানে করোনার জন্য অনেক প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও অনুমোদন হচ্ছে না। তবে শীঘ্রই ওই কাঁচা রাস্তাটি পাকা করণের অনুমোদন পাবো বলে জানান তিনি।