অবৈধভাবে মাটি বহন: ঝিকরগাছার গ্রামাঞ্চলের পাকা রাস্তায় কাঁদা, চলাচলে চরম ভোগান্তি

অসাধু মাটি ব্যবসায়ী আর ইটভাটার মাটি বহন করার ফলে অল্প বর্ষাতেই পাকারাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ট্রাক্টরে মাটি বহনের সময় পাকারাস্তায় যে মাটি ফেলে রাখে তা অপসরণ না করার কারণেই এমন ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের নাকের ডগায় এবং তাদের জানানোর পরেও আজ পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। প্রশাসন এসে বন্ধ করার কয়েক ঘন্টা পরেই আবার চালু হয় ট্রাক্টরের চলাচল। তাদের বিকট শব্দ, বাতাসের সাথে উড়ে আসা ধুলাবালি আর বর্ষা হলেই পাকারাস্তার উপরে কাঁদার সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত দূর্ভোগ পোহাতে হয় গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের।

সরোজমিনে দেখা যায়, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় শংকরপুর ইউনিয়নের বড় পোদাউলিয়া গ্রাম। গত কয়েকমাস ধরে একটি অসাধু মাটি ব্যবসায়ীদের নিয়মিত মাটি উত্তোলন করার ফলে রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ১৫/২০ করে ট্রাক্টর চলেছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে ট্রাক্টরের বিকট শব্দ, বাতাসে ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ ছিল গ্রামবাসী। প্রশাসনের কাছে একাধিবার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। পুলিশ এসে চাবি নিয়ে গেলে কিছু সময়ের জন্য ট্রাক্টরের চলাচল বন্ধ থাকে। পরে আবার শুরু হয় তাদের অত্যাচার। স্থানীয়ভাবে এসমস্থ মাটি ব্যবসায়ী প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। তারা যা করে তাই নিরবেই সহ্য করেন গ্রামের মানুষ।

গত দুইদিন অল্প অল্প করে বছরের প্রথম বৃষ্টিতে জনমনে স্তস্থি ফিরে এলেও চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। বড় পোদাউলিয়া টু বাগআঁচড়া সড়ক, বাঁকড়া টু হাড়িখালী, বাঁকড়া টু খোরদো, বাঁকড়া টু কলারোয়া, সাদিপুর টু দিঘড়ী, দিঘড়ী টু ইস্তা, শিত্তরদাহ টু দিঘড়ী সহ ঝিকরগাছার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ পাকারাস্তার উপরে ব্যাপকভাবে কাঁদা জমেছে।

লেখক আবু তাহের জানান, শুধু পোদাউলিয়া গ্রাম না, মহেশপাড়া, বিষ্ণুপুর এসব গ্রামের রাস্তাগুলোও বেহাল দশা।

বাঁকড়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের জিএম রিফাত হোসেন জানান, এই ব্যবসায়ী সব সময়ই ছিলো। কখনও এই নেতার হাত দিয়ে কখনও ঐ নেতার। বর্ষায় সময় বাঁকড়া এলাকার মানুষের কষ্টের অন্যতম কারণ, ইটের ভাটা। কিন্তু টাকা দিয়ে তারা সব ঠিক নেয়।

হাজিরবাগ ইউনিয়নের মাটিকোমরা গ্রামের গোলাম সরোয়ার জানান, বাঁকড়া টু হাড়িখালি রোড তো আর রোড নাই। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা।

কলেজছাত্র নেওয়াজ আরেফিন রিফাত জানান, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা দরকার। মাটি টানা ট্রাক্টরগুলো এভাবে বেপরোয়া চলতে থাকলে এলাকার রাস্তা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে।

সাদিপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম পিন্টু জানান, ট্রাক্টরে যে পরিমাণ লোড দেয়া হয়, তাতে রাস্তা নষ্ট হতে বেশী সময় লাগবে না। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের নজরদারী থাকা উচিত।

বড় পোদাউলিয়া গ্রামের নুর হোসেন জানান, বহু অভিযোগ করেছি। কোন কাজ হয়নি। প্রশাসনের কর্মকান্ড এবং তাদের নিরবতা আমাদের হতাশ করেছে।