রাজগঞ্জে তরমুজের দাম আকাশছোঁয়া বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে : ক্রেতারা ক্ষুব্ধ

মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে মৌসুমি রসালো ফল তরমুজ এখন কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামত দাম হাঁকিয়ে তরমুজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতা সাধারণের। নিম্ন আয়ের মানুষ হয়ত এ বছর তরমুজের স্বাদই নিতে পারবে না এমনটি মনে করছেন অনেকে।

রমজান এলেই বলা চলে বাঙালির প্রতিটি পরিবারেই ইফতারে থাকে হরেক রকমের মৌসুমি ফলের সমাহার। এবারের রমজানে মৌসুমি ফলের মধ্যে অন্যতম ফল হচ্ছে তরমুজ। সেই তরমুজের দাম এখন আকাশছোঁয়া। দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক রোজাদার আজও তরমুজের স্বাদ কি তা নিতে পারেনি। বিগত বছরগুলোতে উপজেলার রাজগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে সর্বত্রই তরমুজের ছড়াছড়ি এবং পিচ হিসেবে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

চলতি মৌসুমে বাজারে তরমুজের যথেষ্ট যোগান দেখা গেলেও এ বছর তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, তাও আবার ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে। রাজগঞ্জ বাজারসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা এসে বিক্রেতার সাথে দাম নিয়ে রীতিমত বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন।

আবার অনেক ক্রেতা যেহেতু কেজিতে বিক্রি হচ্ছে তাই কেটে ১ কেজি তরমুজ চাচ্ছে দোকানির কাছে, এ নিয়েও চলছে বাকবিদন্ড। ভ্যানচালক সিরাজুল বলেন, এই রোদে দিন শেষে এখন দুই থেকে ৩শ আয় টাকা হয়। এই রোজগারের টাকায় চাল ডাল, মাছ, শাকসবজি কিনলে আর টাকা থাকে না। তাই তরমুজ দেখে তার গায়ে একটু হাত বুলিয়ে চলে যাচ্ছি। ১টি তরমুজ ৫/৬ কেজি ওজন তার দাম হচ্ছে ২০০ হতে ২৪০ টাকা। সারা দিন আয় করছি ৩শ টাকা, আমাদের পক্ষে তরমুজ কেনা কি সম্ভব!

ভ্যানচালক হাবিবুর জানান, লকডাউন চলছে ভয় নিয়ে সড়কে আসি, দিন শেষে যা আয় হচ্ছে কোন রকমে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। এই রোজগারে এ বছর তরমুজ খাওয়া সম্ভব হবে না।

বাজারে আসা রোজাদারসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের প্রশ্ন তরমুজ কেজিতে বিক্রি হওয়ার কারণ কি? যে তরমুজ গত বছরও মানুষ পিস হিসেবে কিনেছে, সেই তরমুজ এ বছর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কেজি ৫/১০ টাকা হলে সাধ্যের মধ্যে থাকতো অথচ ৪০/৪৫ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভোক্তাদের প্রশ্ন এই টাকা কি প্রকৃতপক্ষে ওই চাষির, যে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তরমুজ উৎপাদন করেছে তার পকেটে যাচ্ছে নাকি অন্য কারও পকেটে। কৃষকের তরমুজের ক্ষেত থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রেতা পর্যন্ত যারা ভোক্তার পকেট খালি করে চলেছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্যবসায়ীরা তরমুজ পাইকারি বাজার হতে শপথ হিসেবে কিনে তা কেজিতে বিক্রি করছেন। আমরাও কেজিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজার মনিটরিং করলে কেজি কাহিনি উন্মোচন হবে বলে তারা মনে করছেন।

এপ্রিল ২৯, ২০২১ at ১২:০০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিএইস/এমআরএইস