চৌগাছায় চলতি মৌসুমে সাড়ে ৩শ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ, আবহাওয়া ভালো থাকলে হতে পারে বাম্পার ফলন

যশোরের চৌগাছায় মুখিকচুর চাষ দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিগত বছরে কচুর বাজার দর ভাল থাকায় অনেকেই কচু চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তাই প্রতি বছরই কচুচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাতে সাড়ে ৩শ হেক্টর জমিতে মুখিকচুর চাষ হয়েছে। খরিপ-১ ও রবি এই দুই জাতের কচুর চাষ সব থেকে বেশি। উপজেলা ব্যাপী কম বেশি কচুর চাষ হলেও নারায়নপুর ও স্বরুপদাহ ইউনিয়নে এই চাষ বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এখনাকার চাষিরা কচু চাষ করে অনেকেই এখন স্ববলম্বি, তাই মৌসুম এলেই কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়েন ।

উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা, বড়খানপুর, পেটভরা, স্বরুপদাহ ইউনিয়নের খড়িঞ্চা, আন্দারকোটা, টেংগুরপুর গ্রামের মাঠে যেয়ে দেখা যায়, কৃষক কচু ক্ষেত পরিচর্জায় ব্যস্ত। পবিত্র মাহে রমজানের দিন কাঠফাটা রোদে তারা যে যার জমিতে বিরামহীন ভাবে কাজ করছেন।

এ সময় কথা হয় হাজরাখানা গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফার সাথে। তিনি জানান, মুখিকচু আমরা স্থানীয় ভাবে সারোকচু হিসেবে চিনি। বলাচলে দশ বছর আগেও এ অঞ্চলের কৃষক কচুচাষ কি তা ভাল ভাবে বুঝতো না। কিন্তু বর্তমানে বানিজ্যিক ভাবে কচুচাষ হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে কচুচাষ করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বি। কৃষক মোস্তফা এ বছর ৫ বিঘা জমিতে মুখিকচুর চাষ করেছেন। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আর ফলন ভাল হলে কমপক্ষে ৫শ মন কচু পাবেন বলে আশা করছেন। আর কম করে হলেও প্রতি মন ১ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন। কৃষক মোস্তফার মত ওই মাঠে সাহেদ আলী ১ বিঘা, টিপু সুলতান ৫ বিঘা, আব্দুর রশিদ ২ বিঘা, কালু বিশ্বাস ২ বিঘা, জহুরুল ইসলাম ২ বিঘা, সুবাহান আলী ২ বিঘা, হায়দার আলী আড়াই বিঘা, আশাদুল ইসলাম ২ বিঘা জমিতে মুখিকচুর চাষ করেছেন।

কৃষকরা জানান, ১ বিঘা জমিতে কচুচাষ করতে হলে ৪ থেকে সাড়ে ৪ মন বীজ লাগে। এরপর জমি চাষ থেকে শুরু করে সার কীটনাশকসহ অন্যান্য খরচ দিয়ে মোটামুটি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ভাল ফলন হলে বিঘা প্রতি ৮০ থেকে ১১০ মন কচু উৎপাদন হয়। আর সে সময়ে যদি বাজার দর মোটামুটি ভাল থাকে তাহলে কৃষক বিঘা প্রতি ১ লাখ টাকার কচু বিক্রি করতে পারে। বাজারে দিনদিন মুখিকচুর কদর বেড়ে যাওয়ায় দামও ভাল থাকে। তাই কচুচাষ করে এই অঞ্চলের চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।

টেংগুরপুর গ্রামের কচু চাষি ঠান্ডু শেখ, সাইফুল ইসলাম, আশাদুল ইসলাম বলেন, তাদের মাঠে বেশ কয়েক বছর ধরেই কচুর চাষ হচ্ছে। প্রতি বছর কৃষক কচুর চাষ করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন, তাই দিন দিন এই মাঠে কচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার রইচউদ্দিন জানান, মুখিকচুর চাষ ইতোমধ্যে কৃষকদেও কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতি বছরই কচুচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস এ জনপদের চাষিদের নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে সার্বিক সহযোগীতা অব্যহত রেখেছেন।

এপ্রিল ২৩, ২০২১ at ১৯:৫০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমআরএইস