যশোর পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী যারা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ কে কত ভোট পেলেন

যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনি খান পলাশ (নৌকা) বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এ জয়ের ফলে মেয়র হিসেবে নতুন মুখ পেলেন নগরবাসী। এছাড়া কাউন্সিলর পদে আরও ছয় নতুন মুখ জয়ী হয়েছেন।

প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন সাহিদুর রহমান, জাহিদ হোসেন, রাজিবুল আলম, প্রদীপ কুমার নাথ বাবলু, শাহেদ হোসেন নয়ন, ও আসাদুজ্জামান বাবলু। আর রাশেদ আব্বাস রাজ, মোকসিমুল বারী অপু, আলমগীর কবীর সুমন, এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আইরিন পারভীন ডেইজি, নাছিমা আক্তার জলি ও শেখ রোকেয়া পারভীন ডলি ফের নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বুধবার সন্ধ্যায় যশোর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

তিনি জানান, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৫২ হাজার ৭৮৩ জন। যা মোট ভোটারের ৩৬ শতাংশ। যশোর পৌরসভায় এক লাখ ৪৬ হাজার ৫৯৪ জন ভোটার রয়েছেন। এরমধ্যে সব ওয়ার্ডেই পুরুষদের চেয়ে নারী ভোটার সংখ্যা বেশি। পুরুষ ভোটার ৭২ হাজার ৪৫ এবং নারী ভোটার ৭৪ হাজার ৫৪৯ জন। এবারের ভোটাররা জীবনে প্রথম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন।

উল্লেখ্য, ৩১ মার্চ প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) যশোর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে এ ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে তিন মেয়রসহ ৬৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার গনি খান পলাশ নৌকা প্রতীকে ৩২ হাজার ৯০২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটমত প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সর্দার হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ১২৪ ও দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপির প্রার্থী মারুফুল ইসলাম মারুফ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পরও ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৭৫৭ ভোট।

সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর- ১ (১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড) এ নয়জন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর আইরিন পারভীন ডেইজি পুনরায় বিজয়ী হয়েছে। তিনি চশমা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন চার হাজার ১৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আয়েশা ছিদ্দিকা আংটি প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ৫৪১, অর্চণা অধিকারী দ্বিতল বাস প্রতীকে দুই ১৬৫ ভোট, রেহেনা পারভীন হারমোনিয়াম প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ১৪৬ ভোট। এছাড়া সান-ই শাকিলা আফরোজ আনারস প্রতীকে পেয়েছেন এক ৭৯৭ ভোট, সুফিয়া বেগম বলপেন প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৪০৮ ভোট, রুমা আক্তার অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৯৭৬, রোকেয়া বেগম টেলিফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৯৪২ ও সেলিনা খাতুন জবাফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২৪ ভোট।

সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর-২ (৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড) এ বর্তমান কাউন্সিলর নাসিমা আক্তার জলি আনারস প্রতীকে ১৪ হাজার ১১৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নাছিমা সুলতানা চশমা প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ১৮৫ ভোট।

সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর-৩ (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) এ বর্তমান কাউন্সিলর শেখ রোকেয়া পারভীন ডলি আনারস প্রতীকে ১০ হাজার ৮৩৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শংকরপুর বটতলা মসজিদ এলাকার সালমা আক্তার বানী চশমা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন সাত হাজার ৯০৭।

১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন সাধারণ কাউন্সিলরের সাহিদুর রহমান পাঞ্জাবি প্রতীকে পাঁচ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আহম্মদ শাকিল গাজর প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৮৪৬ ভোট এবং জাকির হোসেন রাজিব উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৫৫৯ ভোট।

২ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর শেখ রাসেদ আব্বাস রাজ পানির বোতল প্রতীকে দুই হাজার ১৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ সালাউদ্দীন আহমেদ ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ১৪৮ ভোট, জাহিদুল ইসলাম উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮০ ভোট, তপন কুমার ঘোষ টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬৭ ভোট, ওসমান উজ্জামান চৌধুরী গাজর প্রতীকে পেয়েছেন ২৩১ ভোট ও অনুব্রত সাহা মিঠুন ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৫।

৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মোকসিমুল বারী অপু। তিনি গাজর প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৬৮৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্বির মালিক উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৯৫৯ ভোট, কামরুজ্জামান পাঞ্জাবি প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫৫ ভোট, উম্মে মাকসুদা মাসু টেবিল ফ্যান প্রতীকে পেয়েছেন ৩১৮ ভোট এবং ওমর ফারুক ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩ ভোট।

৪ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে জাহিদ হোসেন মিলন টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে তিন হাজার ৫৬২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তা পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ৪৬৫ ভোট এবং পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন মিঠু উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ১২১ ভোট।

৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে রাজিবুল আলম ব্লাকবোর্ড প্রতীকে দুই হাজার ৭৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাফিজুর রহমান উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৭৩৬ ভোট, মোকছেদুর রহমান ভুট্টো পেয়েছেন ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন ৫৭৮ ভোট, শরীফ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৭ ভোট, বর্তমান কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান চাকলাদার টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ২৯৫ ভোট এবং মিজানুর রহমান বাবলু পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন ২৪৩ ভোট।

৬ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন পাঞ্জাবি প্রতীকে দুই হাজার ৪৮০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এসএম আজাহার হোসেন স্বপন টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৫২৭ ভোট, আশরাফুজ্জামান পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৪৬ ভোট, আশরাফুল হাসান উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৪, আনিসুজ্জামান ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন ৯৫ ভোট।

৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাতজন প্রার্থীর মধ্যে শাহেদ হোসেন নয়ন ব্লাকবোর্ডব প্রতীকে এক হাজার ৫৬৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার আলী পানির বোতল প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৪৬ ভোট, কামাল হোসেন ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৮৯ ভোট, শাহেদ উর রহমান রনি টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ৯৯০, বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৮৭৭ ভোট, আবু শাহজালাল ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৫২৮ ভোট, শামসুদ্দিন বাবু পাঞ্জাবি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮৯ ভোট।

৮ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন প্রার্থীর মধ্যে প্রদীপ কুমার নাথ বাবলু উটপাখি প্রতীকে দুই হাজার ১১৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মাসুম ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৩১৪ ভোট, বর্তমান কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ১৫১ ভোট ও ওবাইদুল ইসলাম রাকিব টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯৭ ভোট।

৯ নম্বর ওয়ার্ডে আটজন প্রার্থীর মধ্যে অ্যাড. আসাদুজ্জামান বাবুল পানির বোতল প্রতেিক পেয়েছেন দুই হাজার ৪০৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম ব্রিজ প্রতীকে পেয়েছেন দুই হাজার ২৮৬ ভোট, শেখ ফেরদৌস ওয়াহিদ টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৮ ভোট, খন্দকার মারুফ হুসাইন গাজর প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯৪ ভোট, আবু বক্কার সিদ্দিকী ব্লাকবোর্ড প্রতীকে পেয়েছেন ২৬১ ভোট, স্বপন কুমার ধর উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ১৯৭ ভোট শেখ শহিদ পাঞ্জাবি প্রতীকে পেয়েছেন ১১০ ভোট, শেখ নাছিম উদ্দিন পলাশ ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ ভোট।