মণিরামপুরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানবন্ধনসহ

যশোরের মণিরামপুরে মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী চেষ্টার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কলেজ শিক্ষার্থী বোরহান কবির (১৮)কে হত্যার ঘটনায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবীতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সোমবার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসির যৌথ উদ্যোগে মনিরামপুর পৌরশহরে বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী পালন করেছেন। রোববার সন্ধ্যায় পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিলসহ থানা ঘেরাও, পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং এদিন দুপুরে ইউএনও অফিসের সামনে মানববন্ধনসহ স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। এ সময় কয়েক’শ শিক্ষার্থী ঘন্টাব্যাপী এসব কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করে। আন্দোলনকারীরা থানা ঘেরাও সময় বোরহান হত্যাকান্ডে ঝাঁপা ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল হক মন্টুকে দোষারোপ করে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রায় এক ঘন্টা পর সেখানে হাজির হন থানার ওসি (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম।

এ সময় ওসি তাদের দাবি আগ্রহ সহকারে শুনেন এবং তদন্তে সাপেক্ষে হত্যাকান্ডে ইউপি চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা পেলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে বিক্ষোভকারীরা থানা ঘেরাও কর্মসূচী স্থগিত করেন। শিক্ষার্থীরা একই দাবী নিয়ে সোমবার দুপুরে ইউএনও অফিসের সামনে মানববন্ধন করে। এরপর ইউএনও’র কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা। নিহত বোরহান কবির পৌরশহরের মোহনপুর এলাকার চালক আহসানুল কবিরের ছেলে। বোরহান মণিরামপুর সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

গত শনিবার সকালে বোরহান পৌর শহর থেকে একটি বাইসাইকেল চালিয়ে খালিয়া গ্রামের পাশ্ববর্তী সাগরা সড়কে যায়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বোরহান নাকি নাঈম নামে এক যুবকের নিকট থেকে মোটরসাইকেলের চাবি কেঁড়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। পরে সে তার বাইসাইকেল চালিয়ে চলে আসার সময় ব্র্যাকের ডিপ এলাকায় আসলে ধর ধর মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী প্রচার চালিয়ে নাঈম তাকে ধরে নিয়ে দফায় দফায় গণপিটুনি দিতে থাকে। খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এসময় তার অবস্থার অবণতি দেখে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যশোর প্রেরণ করেন। সেখানেও তার অবস্থার অবণতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। কিন্তু রোববার ভোর ৪টার দিকে ঢাকায় পৌঁছানোর পরপরই তার মৃত্যু ঘটে।

কলেজ ছাত্র বোরহানকে বেদম মারপিটের অভিযোগ এনে তার পিতা আহসানুল কবীর বাদী হয়ে প্রথমে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু মারপিটে তার মৃত্যুর পর উক্ত অভিযোগ বর্তমানে হত্যা মামলায় পরিণত হয়েছে। মনিরামপুর থানায় যার মামলা নং-৪।

পুলিশ জানায়, কলেজ ছাত্র বোরহানকে হত্যার ঘটনায় উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের নূর ইসলামের পুত্র নাঈম হোসেনকে ইতোমধ্যেই আটক করা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১ at ২০:৪৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিএইস/এমআরএইস