চৌগাছার বিদেশ ফেরত ইদ্রিস পেয়ারার চাষে লাভবান, তাকে অনুসরন করছে অনেকে

যশোরের চৌগাছায় থাই জাতের পেয়ারার চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন বিদেশ ফেরত ইদ্রিস আলী। চার বিঘা জমিতে পেয়ারর চাষ করে ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছেন। গাছে যে পরিমান ফুল ও ফল এসেছে তাতে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন। ইদ্রিস আলীকে অনুসরণ করে এলাকার অনেকেই বর্তমানে পেয়ারা চাষে ঝুকে পড়েছেন।

উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মৃত মহি উদ্দিনের ছেলে ইদ্রিস আলী। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিডিআর বর্তমানে বিজিবি’র সিভিল প্রশাসনে চাকুরী শুরু করেন। ১০ বছর চাকুরী করে ২০০৫ সালে তিনি চাকুরী ছেড়ে দেন এবং ২০০৬ সালে পাড়ি জমান সুদুর সিঙ্গাপুর। দীর্ঘ ৮ বছর বিদেশ থেকে ফিরে আসেন বাড়িতে। দেশে আসার পর অলস সময় পার না করে নিজ গ্রামের মাঠে ৪ বিঘা জমিতে চাষ করেন থাই-৫ জাতের পেয়ারা। পেয়ারা লাগানোর পর ১ম বছরেই তিনি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করেন।

বর্তমানে প্রতিটি পেয়ারা গাছে যে পরিমান ফুল ও ফল এসেছে তাতে করে বাম্পার ফলনের আশা করছেন এই প্রবাসী। পেয়ারার পাশাপাশি তিনি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেছেন উন্নত জাতের লিচু।

ঊুধবার বিকালে নারায়নপুর গ্রামের যেয়ে দেখা যায়, ইদ্রিস আলী নিজের পেয়ারা ক্ষেতে কাজ করছেন। এ সময় কথা হলে তিনি বলেন, পেয়ারা একটি লাভজনক ফসল বলে আমি মনে করছি। চারা রোপনের পর কিছুটা বাড়তি পরিশ্রম করলেই আশানুরুপ ফলন পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, ৪ বিঘা জমিতে থাই-৫ জাতের পেয়ারার চাষ করেছেন। পেয়ারা চাষে তার দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই ব্যয় যে খুব একটা বেশি তা কিন্তু নই।

বর্তমানে পেয়ারা বাগানের প্রতিটি গাছে ফুল আর ফলে ভরে গেছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয়, আর বাজার দর যদি ভাল থাকে তাহলে বেশ লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করছেন।

ইদ্রিস আলী জানান, পেয়ারার পাশাপাশি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে উন্নত জাতের লিচু চাষ করেছেন। তিন বছর ধরে প্রতিটি গাছে লিচু ধরছে। গত বছরের আম্পানে তার লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়। চলতি মৌসুমে প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমানে মুকুল আসতে শুরু করেছে। গত বারের ক্ষতি এ বছর পুশিয়ে উঠতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।

শিক্ষিত এই ব্যক্তির অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম এলাকার প্রকৃত কৃষকদের হৃদয় স্পর্শ করেছেন। স্থানীয় একাধিক চাষি বলেন, ইদ্রিস আলী আমাদের অনেকের কাছে মডেল বলাচলে। তিনি শিক্ষিত, চাকুরী করেছেন এবং বিদেশে থেকেছেন। এরপর দেশে এসে নতুন নতুন চাষাবাদ করে একের পর এক সাফল্য পেয়েছেন। তাকে অনুসরণ করে অনেকেই একই পথ চলতে শুরু করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচউদ্দিন বলেন, চৌগাছাতে ২৮০ হেক্টার জমিতে নানা জাতের পেয়াারা চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে থাই-৫, ৭ ও থাই গোল্ডেন-৮ উল্লেখযোগ্য। প্রবাসী ইদ্রিস আলীর মত অনেকেই পেয়ারা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। কৃষি অফিস চাষিদের সর্বদা সহযোগীতা প্রদান করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।