নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের আর নেই

একুশে পদকজয়ী মঞ্চ ও টিভি অভিনেতা, পরিচালক এবং মুক্তিযোদ্ধা আলী যাকের মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭৬ বছর। নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার এ খবর নিশ্চিত করেন।

প্রায় চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। এ ছাড়া ছিল বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা।

বার্ধক্য ও হার্টের সমস্যাসহ কিছু শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ১৭ নভেম্বর রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আলী যাকেরকে। সেখানে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ নাট্য ব্যক্তিত্ব। আলী যাকের ছিলেন চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয়। তার বাবা মোহাম্মদ তাহের ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বাবার চাকরির বদলি সূত্রে অল্পবয়সে কুষ্টিয়া ও মাদারিপুরে কাটান আলী যাকের।

তিনি নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আলী যাকের ৮ নং সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

১৯৭২ সালে তিনি মঞ্চনাটকের দল আরণ্যকে যোগদান করেন। নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর বিখ্যাত ‘কবর’ নাটকের মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম মঞ্চে উঠেন। পরবর্তীতে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগদান করেন। সেখানে তার অভিনীত ‘দেওয়ান গাজির কিসসা’, ‘নুরুল দিনের সারাজীবন’ দেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।

টেলিভিশন নাটকে ‘আজ রবিবার’ ও ‘বহুব্রীহি’ দিয়ে তিনি পরিচিত লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে নাট্য অভিনেত্রী সারা যাকেরকে বিয়ে করেন। তাদের ছেলে ইরেশ যাকের ও মেয়ে শ্রেয়া সর্বজয়া।

আলী যাকের একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পদক, বঙ্গবন্ধু পদক, মুনির চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ একাধিক সম্মাননা পান।

২৭ নভেম্বর, ২০২০ at ১১:২৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/দেরু/এমএআর