পানি কমে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জে চাঁই বিক্রির ধুম

সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর শাখা করতোয়া, ইছামতী, বড়াল, সরস্বতী, ফুলজোড়সহ খাল-বিল ও ডোবা-নালা থেকে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় মাছ ধরায় ব্যস্ততা বেড়েছে জেলেসহ নানা বয়সী সৌখিন মাছ শিকারীদের। নদী ও বিল ঘেরা জেলায় মাছের জন্য বেশ বিখ্যাত। জেলায় ছোট বড় মোট ১৬ টি নদী রয়েছে।

উল্লাপাড়া, সলঙ্গা ও রায়গঞ্জ হাটসহ আশ-পাশের হাট-বাজারে মাছ ধরার উপকরন চাঁই (দোয়ারি), চাড়ো, পলো, ইত্যাদি বিক্রির ধুম পড়েছে। এই উপকরণ দিয়ে প্রতিদিন টেংরা, পুটি, খলসে, টাকি, মোয়া ও শিং মাছসহ দেশীয় অন্যান্য প্রজাতির মাছ শিকার করছে জেলেরা।

সলঙ্গা হাটে চাঁই তৈরির কারিগর আলম শেখ বলেন, বন্যার পানি এলেই এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বাঁশ কিনে চাঁই তৈরি করে। এক একটি বাঁশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দামে কিনেন। এক একটি বাঁশ থেকে তিনটি চাঁই তৈরি করা যায়।

সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার সংলগ্ন বসে চাঁইয়ের হাঁট। ভ্যান বোঝাই করে চাঁই বিক্রির জন্য বিক্রেতারা নিয়ে আসে এখানে। দূর দুরান্ত থেকে মৎস শিকারীরা চাঁই কিনতে আসে এখানে। এক একটা চাঁই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি হয়। বড় আকারের চাঁই বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। এই হাটে বগুড়া-পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গার জেলে ও পাইকারীরা চাঁই ক্রয় করে নিয়ে যায়।

হাটে চাঁই বিক্রেতা নাটোর উপজেলার বড়াইগ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি চাঁই তৈরীতে যা খরচ হয় তা থেকে বিক্রিতে ভালই লাভ হয়। একজন কারিগর সারা দিনে ছোট আকারের দুইটি দোয়ারি চাঁই বানাতে পারে। গেল বছরের চেয়ে এবছর বেচা কেনা হচ্ছে দামও একটু বেশি পাচ্ছি।

চাঁই কিনতে আসা রায়গঞ্জ উপজেলার দুলাল শেখ জানান, চাঁইয়ে চিংড়ি, বোয়াল, বাইনসহ নানান ধরনের দেশী মাছ ধরা পরে। পরিশ্রমও কম। চাঁই পেতে কয়েকঘন্টা পর দেখতে হয় মাছ পরেছে কি না। তাছাড়া বাজারে চাঁইয়ে ধরা মাছের চাহিদাও থাকে বেশি কারণ চাঁইয়ে পড়া মাছ গুলো তাজা থাকে। খাল-বিল, জলাশয়, ক্ষেত বা ডোবা হতে নিজ হাতে ধরা তাজা মাছের স্বাদই আলাদা। জমির আইলে, খালের মধ্যে বা যে কোন জায়গায় চাঁই পেতে মাছ ধরার উপযুক্ত সময় এখন। তাই তো এখন বাজারে চাঁই এর কদরও বেড়েছে।

০২ নভেম্বর, ২০২০ at ১২:৩৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআর/এমএআর