শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা…শিক্ষামন্ত্রী

মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা ভাবতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করলে পরিস্থিতি কি হবে। সবার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে, সমন্বিত পরীক্ষার বিষয়টাও ভাবতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজের স্বার্থের কথা ভাবলে চলবে না। শিক্ষার্থীদের কথা ভাবতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখব, যা প্রয়োজন তাই করব। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকের ঝুঁকি থাকলে সে পদক্ষেপ নেবো না। যেখানে ঝুঁকি থাকবে না সেখানে সেভাবে ভাববো। এক সপ্তাহ পর কি হবে সেটি আমরা বলতে পারি না। এ মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। সামনের দিনে করোনা বাড়বে কিনা সেটি বলা যাবে না। আমরা পর্যালোচনা করছি, শিক্ষার্থীদের জন্য যেটি সবচেয়ে ভালো সেটিই করব।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে নজর দেওয়া কঠিন নয়। তবে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল শিক্ষার্থীকে বসানো যাবে কিনা সেটি দেখছি, তাই সীমিত পরিসরের কথা বলছি। দশম শ্রেণি, দ্বাদশ শ্রেণিকে যদি আলাদা রুমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসাতে পারি। সেটিও দেখছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে যদি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারি তাহলেই সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

নতুন বছরে বই উৎসব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নতুন বছরের বই প্রস্তুত আছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বই উৎসবের মতো গণজমায়েত করা সম্ভব হবে কিনা সেটি দেখার বিষয়। কারণ স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে এ ধরনের অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে না। বই উৎসব করতে গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নেবো সেটি ঠিক হবে না। আমরা বিকল্প কি করতে পারি সেটি জানিয়ে দেবো।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে সেটি ইউজিসিতে পাঠিয়েছিলাম। তারা তদন্ত করেছেন। এবং একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। সেটি এখনও আমার কাছে এসে পৌঁছায়নি। রাবি উপার্যের বিষয়ে পর্যালোচনা করব। আমরা এ বিষয়টা নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত জানাবো।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, রাবি উপাচার্যের বিষয়ে যে অভিযোগ এসেছে আমরা কিন্তু সেটি তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে গণশুনানি করে তদন্ত করার বিষয়টি বিধিসম্মত কিনা সেটি দেখব। আমরা কিন্তু গণশুনানি করার কোনো নির্দেশনা দেইনি, তদন্ত করার জন্য বলেছি।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। উল্লেখ্য করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি রয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাও, এর পরিবর্তে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড়ের ওপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।

২৯ অক্টোবার, ২০২০ at ১৩:২১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিএন/এমএএস