দক্ষীণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ চৌগাছা তুলা ফার্মে ৪৩ একর জমিতে তুলার চাষ রেকর্ড ফলনের আশা

যশোরের চৌগাছায় দক্ষীণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ তুলা গবেষণা ও বীজবর্ধন খামারে এ বছর তুলার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। খামারের ১শ ৫৭ একর জমির মধ্যে ৪৩ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের তুলা। এরমধ্যে বিশ্বের বেশ কিছু রাষ্ট্র থেকে উন্নত জাতের তুলা বীজ সংগ্রহ করে লাগনো হয়েছে। গবেষণার মধ্যেমে এই তুলা ভাল হলে তা কৃষকের মাঝে দেয়া হবে। বর্তমানে সুবিশাল এই খামার এখন সবুজের সমারোহ, পড়ন্ত বিকেলে স্থানীয়সহ অনেকে খামারের মনোরম পরিবেশ দেখতে সেখানে ঘুরতে আসেন।

চৌগাছা উপজেলার জগদীশপুর গ্রামে অবস্থিত দক্ষীণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ তুলা গবেষণা ও বীজবর্ধন খামার। সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ধুধু বালুময় মাঠে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এক সুধি-সমাবেশে এই খামার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে খামারটি আজও তার সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসি। জগদীশপুর, মির্জাপুর, কান্দি, আড়কান্দি, স্বর্পরাজপুর, পুড়াহুদা গ্রামের চাষিদের কাছ থেকে ১শ ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে খামার প্রতিষ্ঠিত হয়। খামারের মূল জমির ৪৩ একরে এ বছর চাষ করা হয়েছে নানা জাতের তুলা। বর্তমানে প্রতিটি তুলা গাছ ফুল ও ফলে ভরে গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তুলার বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করেছেন খামার কর্তৃপক্ষ।

তুলা ফার্মে যেয়ে দেখা যায় খামারের বেশির ভাগ এলাকা জুড়ে শুধুই সবুজ আর সবুজ। বিগত বছর গুলোতেও তুলা চাষ হলেও বর্তমান পরিবেশ অনেকেই দেখিনি বলে জানান এলাকাবাসি। স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম রসুল বলেন, খামারের পরিবেশ আগের যে কোন সময়ের থেকে অনেক ভাল। চারপাশ প্রাচীর নির্মাণ করায় যেমন খামারের নিরাপত্তা ভাল হয়েছে তেমনি ভাবে চাষ করা তুলাও ভাল ভাবে বেড়ে উঠেতে পারছে।

খামরে ঘুরতে আসা পাশ্ববর্তী কোটচাঁদপুরের হারুন-অর-রশিদ বলেন, তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে মাঝে মধ্যে এই খামারে ঘুরতে আসেন। তবে এ বছর খামার যেন অন্য রকম এক সাজে সেজেছে। খামারের চারপাশ প্রাচীর নির্মাণ এবং ব্যাপক তুলা চাষের কারণে এই পরিবেশ বেশ ভাল লাগছে। খামারের বর্তমান পরিবেশ ভ্রমন পিপাসু যে কোন ব্যক্তির কাছে ভাল লাগবে।

জগদীশপুর তুলা গবেষণা ও বীজবর্ধন খামারের ব্যবস্থপক শেখ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, এই খামারে মুলত গবেষণা ও চাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। দেশ বিদেশের উন্নত জাতের তুলা বীজ সংগ্রহ করে খামারে পরীক্ষা মূলক চাষ করে সেই তুলা ভাল হলে আমরা পরবর্তীতে কৃষকের মাঝে তা চাষের জন্য বিতরণ করি। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে খামারে ৪৩ একর জমিতে নানা জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে সি, বি-১২ সি,বি-১৪, হাইব্রিড-১ এবং গবেষণার জন্য তুরাস্ক, চীন ও ব্রাজিল হতে সি, বি-১৩ ও সি, বি-১৬ জাতের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই সকল তুলারও চাষ করা হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে এই তুলা উপযুক্ত মনে করা হলে তা পরবর্তীতে কৃষকের মাঝে দেয়া হবে। ব্যবস্থপক শেখ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, এখনও পর্যন্ত খামারে চাষ করা তুলা খুব ভাল অবস্থায় আছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তাহলে তুলা চাষে এ বছর অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

২৭ অক্টোবার, ২০২০ at ২১:০৪:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমএএস