চৌগাছায় পড়ন্ত বিকেলে শিশু কিশোরা বড়শিতে মাছ শিকারে মগ্ন

বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ঐতিহ্য খুবই প্রাচীন। বর্ষা মৌসুমের পর খাল বিল জলাশয়ে পানি কমার সাথে সাথে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। তবে এ বছর করোনার কারনে বিকেলে খাল বিলে মাছ শিকারের সংখ্যা বেশি দেখা মিলছে। বিকেল হলেই মাছ ধরার এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যেন ফেলে আসা স্মৃতিকে ভীষনভাবে নাড়া দেয়। এই দৃশ্য সাধারণ মানুষের মনেও আনন্দের খোরাক যোগায় এমনটিই জানালেন স্থানীয় বয়োবৃদ্ধরা।

ভারত সীমান্তের গা ঘেষে গড়ে উঠা যশোরের চৌগাছা উপজেলা। মহামারি করোনা ভাইরাসের নীল ছোবেল সারা বিশে^র মত অনেকটাই থমকে গেছে সীমান্তবর্তী উপজেলাতে বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষের জীবনযাত্রা। বিশেষ করে স্কুল, কালেজ মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত শিশু কিশোররা প্রায় ৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বলাচলে ঘরবন্দি। এই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও আনন্দ পেতে শিশু কিশোররা তার অভিভাবকের অনুমতি ক্রমেই দুপুর কিংবা পড়ন্ত বিকেলে বের হচ্ছে ঘরের বাইরে। এই সময়টিতে তারা বাড়ির অদুরে খাল বিলে ছিপ আর বড়শিতে মাছ শিকারে মেতে উঠছে।

পৌর এলাকার জিওয়লগাড়ী বিলের ধারে যেয়ে দেখা যায়, স্থানীয় শিশু কিশোররা ওই বিলের পানিতে বড়শিতে মাছ শিকারে মেতে উঠেছে। প্রতিটি বড়শিতে দেশি পুটি, টেংরা আবার কোন কোন সময়ে তেলাপিয়া মাছও হচ্ছে। তাই মাছ শিকার করতে আসা শিশুদের কথা বলার মত সময়টুকু নেই। বেলেমাঠ গ্রামের আল আমিন স্থানীয় স্বরুপদাহ স্কুলের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র।

বড়শিতে মাছ ধরে সে ভিষন আনন্দ পাচ্ছে। তার মত মাছ শিকারে আসা ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র সাদিক হাসান, রফিকুল ইসলাম, কিন্ডার স্কুলের কেজি শ্রেনীর ছাত্র নয়ন হোসেন, ২য় শ্রেনীর ছাত্র জুবায়ের হোসেন, ৫ম শ্রেনীর ছাত্র দূর্জয় ও অংকন এবং ৭ম শ্রেনীর ছাত্র সংগ্রাম হোসেন বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা প্রায় প্রতি দিনই বিকেলে মাছ ধরতে আসি। এ বছর বিলের পানিতে প্রচুর মাছ তাই বড়শি পানিতে ফেললেই মাছ হচ্ছে, মাছ ধরা অবশ্যই একটি মজার ব্যাপার বলে শিশুরা জানায়।

অভিভাবক হাফিজুর রহমান বলেন, আমি মনে করি করোনা কালীন সময়ে বড়দের থেকে শিশুরাই বেশি নিয়ম মেনে চলেছে এখনও চলছে। তারা পিতা মাতার অবাধ্য হয়নি। দীর্ঘ সময় ঘরে থাকায় শিশুরা এক প্রকার হাফিয়ে উঠেছে। তাই বিকেলে শিশুরা যে দল বেঁধে মাছ শিকার করছে নিশ্চয় এটি ভাল লাগার বিষয়।

১৬ অক্টোবার, ২০২০ at ২০:০৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমএআর