ঠাকুরগাঁয়ের কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেহাল দশা

করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। একদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ অপরদিকে, বন্ধ রয়েছে কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট পড়ানো। ফলে কিন্ডার গার্টেনের প্রায় কয়েকশ শিক্ষক পড়েছেন মহাবিপাকে।

আবার অনেক শিক্ষক একটু বাড়তি আয়-রোজগারের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বাসায় গিয়ে পড়াতেন কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রামণের ভয়ে অভিবাবকদের সম্মতি না থাকায় তাও রয়েছে বন্ধ। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থী অর্থ্যাৎ ছেলেমেয়েদের পড়ানো জন্য শিক্ষকদের বাসায় যাওয়ারও কোনো সম্মতি দিচ্ছেন না অভিবাবকরা।

প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা তাদের প্রতিষ্ঠানের বেতন বা সম্মানী পাওয়া নিয়েও অশ্চিয়তার মধ্যে রয়েছেন। প্রায় প্রতিটি শিক্ষক তাদের পরিবার নিয়ে কিভাবে বাড়তি দিনগুলি কাটাবে এনিয়ে পড়েছেন মহা দুশ্চিনতায়। শিক্ষক হওয়ার ফলে মানসম্মানের ভয়ে সরকারের সাহায্য সহযোগিতা হাত পেতে নিতে পারছেন না। এমনই কষ্টের কথা জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁয়ের অনেক শিক্ষক।

জানা গেছে, উপজেলায় ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিও ভুক্ত স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন অনেক। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সরকারিভাবে নানা সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। অপরদিকে সারা উপজেলায় বেসরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত প্রায় ১০০টি কিন্ডার গার্টেন রয়েছে। শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার।

পৌরশহরে রয়েছে বিভিন্ন নামে ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব কিন্ডার গার্টেনে প্লে ও নার্সারি থেকে ৯ম ও দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়ে থাকে। ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা করানোর জন্য কর্মরত আছেন বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় ১৫০০ শিক্ষক। শিক্ষকরা অনেকে আবার যৌথভাবে ঘর বা ভবন ভাড়া নিয়ে শিক্ষা কার্য়ক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। একদিকে গুণতে হবে ঘরভাড়া ও শিক্ষকদের বেতন বা সম্মানি অন্যদিকে পরিবারের ভরণ-পোষণ।

এ ব্যাপারে পৌরশহরের আগোমনী ক্লাবের পাশে লিবার্টি রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এস এম বেলাল বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে যে বেতন বা সম্মানি দেই তা দিয়ে অনেক শিক্ষকের পরিবারের ভরণ-পোষণ অপূর্ণতায় থেকে যেত। এ সময়ে সরকারিভাবে একটু আর্থিক সহায়তা পেলে শিক্ষকরা মহাদুচিন্তা থেকে পরিত্রাণ পেত।

শহরের কিন্ডার গাডেন স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে বন্ধ। স্কুল ভবনের ভাড়া দেব নাকি শিক্ষকদের বেতন দেব। আবার রয়েছে পরিবারের ভরণ-পোষণ।

লিবার্টি স্কুল এর পরিচালক এস এম বেলাল বলেন, সরকারের নির্দেশনার প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়ে শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়ানো থেকেও বিরত রয়েছেন। অনেক শিক্ষক আবার ফোনে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তাই সরকারিভাবে একটু আর্থিক সহযোগিতা পেলে হয়তো অনেক শিক্ষক দাঁড়াতে পারবে।

১৩ অক্টোবার, ২০২০ at ১৫:৪২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এএ/এমএএস