যশোরে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ : সাক্ষীর কথা বলে থানায় নিয়ে ছয় শ্রমিককে ধর্ষণ মামলায় আসামি

মামলায় সাক্ষী হওয়ার কথা বলে থানায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ মামলায় ছয় শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ শ্রমিকদের ফাঁসিয়েছে। রোববার সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছে পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ৯ অক্টোবর ওই নারী রাজশাহী থেকে এমকে পরিবহনের একটি বাসে করে যশোরে পৌঁছান। এমকে পরিবহনের হেলপার মনিরুল ইসলাম মনির সাথে তার পরকীয়া চলছিল। সেই সূত্রে মনির ওই নারীকে তার বাড়ি বাঘারপাড়ায় যেতে না দিয়ে বাসের মধ্যে রাত্রীযাপন করে। বাসের মধ্যে তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। বাসটি যে স্থানে রাখা ছিল সেখান থেকে মনি বাসটি সরিয়ে কোল্ড স্টোরেজের পাশের সানি বিল্ডিংয়ের সামনে রাখে।

এদিকে বাস হারিয়ে গেছে এমন সংবাদ পেয়ে ছয় শ্রমিক রাতে খুঁজতে বের হয়। তারা গিয়ে দেখেন বাসের মধ্যে অনৈতিক কাজ চলছে। সেই সময় মনিসহ ওই নারীকে আটক করে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, বাস একজন মোটর শ্রমিকের রুটিরুজির পথ। বাসে উঠার সময় একজন চালক স্টেয়ারিং ধরার আগে সৃষ্টিকর্তার নাম নেন। শ্রমিকরা বাসের দরজায় আগরবাতি জ্বালিয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা করে থাকেন। সেই বাসের মধ্যে একজন নারীকে নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন কেউ মেনে নেয় না। ফলে উত্তেজিত হয়ে শ্রমিকরা হেলপার মনিকে মারপিট করতে পারে। ওই নারীর শরীরে আঘাত করা হলে তা অপরাধ। তার জন্য অন্য কোনো মামলা হতে পারে। কিন্তু মনির সাথে বাকি ৬ জনকে ধর্ষণের মামলার আসামি করা হবে এটা মেনে নিচ্ছে না শ্রমিক নেতারা। এছাড়া আসামি মনিরুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। বলেছে ওই নারীর সাথে স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তাকে জোর করা হয়নি।

পূর্বপরিচয়ের সূত্রধরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। তার দায় এই ৬ শ্রমিক নেবে কেন? পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৬ শ্রমিককে থানায় ডেকে নিয়ে যায়। বলা হয় তাদের মামলায় সাক্ষী করা হবে। সে মোতাবেক পুলিশের সাথে শ্রমিক নেতা ও মালিকপক্ষের সাথে কথা হয়। কিন্তু পরদিন সন্ধ্যার দিকে ৬ জনকে ধর্ষণ মামলায় আসামি করা হলো। তাদের বিরুদ্ধে মামলা মেনে নিতে পারছে না সাধারণ শ্রমিক। তারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করা হয়। হেলপার মনিরুল যিনি ধর্ষণ মামলার মূল আসামি তিনি পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের কোনো সদস্য না। এই ঘটনার পর মনিরুল চাকরিও হারিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা হোসেন। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু, বর্তমান সহসভাপতি সাহেদ হোসেন জনি, শেখ হারুর অর রশিদ ফুলু, মিজানুর রহমান মিজু, মিন্টু গাজী প্রমুখ।

এ প্রসঙ্গে কোতয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেছেন, ওই রাতে যা ঘটেছে তা সিনিয়র কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

১১ অক্টোবার, ২০২০ at ২২:৫৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএআর/এমএআর