চৌগাছায় বর্গাচাষীর ধরন্ত শিম গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা

যশোরের চৌগাছায় এক হতদরিদ্র কৃষকের প্রায় ১ বিঘা জমির ধরন্ত সীম গাছ অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে কেটে দিয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সাদিপুর গ্রামের সাড়াতলা খালকান্দা মাঠে এই ঘটনা ঘটেছে। সীম গাছ কাটা খবরে ভুক্তভোগী পরিবারে চলছে স্বজন হারানোর মত বুকফাটা আর্তনাদ। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসি ক্ষতিগ্রস্থ্য সীম ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলার সাদিপুর গ্রামের মৃত বিলাত আলীর ছেলে কৃষক আরশাদ আলী (৬৫)। নিজের কোন জায়গা জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে সংসার চালান। চলতি মৌসুমে গ্রামের মাঠে প্রায় ১ বিঘা জমি ১২ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে ওই জমির ১৫ কাটায় তিনি সীম চাষ করেন। ইতোমধ্যে সীম উঠা শুরু করেছে। কিন্তু শনিবার দিবাগত রাতে কে বা কারা ওই কৃষকের সমুদয় সীম গাছ কেটে দিয়েছে। সকালে কৃষক সীম ক্ষেতে কাজ করতে এসে এই দৃশ্য দেখতে পাই। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার কৃষকরা জমিতে ছুটে যান এবং দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন। এ সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ভুক্তভোগী কৃষক ও তার স্ত্রী।

তাদের আর্তনাদে অনেকের চোখের পাঁপড়ি ভিজে উঠে। সাদিপুর গ্রামের তবিবর রহমান, আব্দার আলী, আইনাল হক, মকছেদ আলী, আনিছুর রহমানসহ অনেকে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষক আরশাদ আলী অত্যান্ত নিরিহ প্রকৃতির মানুষ। তার কোন শত্রু থাকতে পারে আমরা বিশ্বাস করিনা। তিনি শারীরীক ভাবে রোগাক্রান্ত, অনেক কষ্টে পরের জমি লিজ বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন। কিন্তু তার যে ক্ষতি হয়েছে সেটি কখনও পুশিয়ে নেয়া সম্ভব না। এর সাথে যারা জড়িত তাদের খুজে বের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ্য কৃষক আরশাদ আলী বলেন, ধার দেনা করে সীমের চাষ করেছি, এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। গত হাটে ৩ কেজি সীম উঠেছিল, সোমবার হাটে কমপক্ষে ২০ কেজি সীম উঠত কিন্তু আমার সব শেষ করে দিয়েছে। কি ভাবে দেনা পরিশোধ করবো আর কিভাবেই পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবো এই চিন্তায় এখন দিশেহারা।

পাতিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান লাল বলেন, সংবাদ পেয়ে খুব সকালেই ঘটনাস্থল মাঠে যায় এবং কৃষক আরশাদ আলীকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করি। ফসলের সাথে শত্রুতা এটি কোন ক্রমেই মেনে নেয়ার মত নই। এর সাথে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।

০৩ অক্টোবার, ২০২০ at ২০:০২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমএআর