যশোরে বোমা মেরে ছিনতাই ঘটনায় আটক ৫

যশোরে প্রকাশ্যে জনবহুল এলাকা থানার পাশে বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের আলোচিত ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা, ২টি চাকু, ব্যাগ ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল। ছিনতাইয়ের মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতার হলেও বাস্তবায়নকারীসহ আরও দু’জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আটককৃতরা হলো, যশোর শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকার শফি দারোগার বাড়ির ভাড়াটিয়া ফরিদপুর জেলার মুনসুর মোল্যার ছেলে টিপু (২৪), শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে সাঈদ ইসলাম ওরফে শুভ (২৪), ধর্মতলা হ্যাচারিপাড়া এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে বিল্লাল হোসেন ওরফে ভাগনে বিল্লাল (২২), সিটি কলেজ এলাকার ব্যাটারিপট্টি এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে রায়হান (২৮) ও পূর্ব বারান্দি মালোপাড়ার মুফতি আলী হুসাইনের ছেলে ইমদাদুল হক (২১)। এ টাকা লুটের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী টিপু এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী ‘জামাই’ রাজ্জাক ফকির এখনও গ্রেফতার হয়নি বলে জানান পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিনে-দুপুরে থানার একশ’ গজের মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লি. (ইউসিবিএল) এর সামনে বোমা ফাটিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছুরিকাঘাত ও বোমার আঘাতে টাকা বহনকারী দু’জন আহত হন।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চাঞ্চল্যকর এই ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন। তিনি বলেন, আরএন রোড এলাকার আগমনী মটরস্’র মালিক ইকবাল হোসেনের পার্টস ও ফলের ব্যবসা রয়েছে। তার ভাই এনামুল হক ফলের আড়তের ১৭ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য যাচ্ছিল। এ আড়তের দীর্ঘদিন শ্রমিকের কাজ করতো টিপু। মাঝে মাধ্যেই এনামুল মোটরসাইকেলে করে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার বিষয়টি জানা ছিল তার। টিপুই এই টাকা লুটের পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পাশের ফল ব্যবসায়ী রাজ্জাক ফকির ওরফে জামাই রাজ্জাককে সাথে নেয়। জামাই রাজ্জাকই বাকী অপরাধীদের যুক্ত করে।

এসপি আরও বলেন, ঘটনার সময় টিপু রাস্তার বিপরীত পাশে থেকে টাকা বহনকারী এনামুলকে সঙ্গীদের চিনিয়ে দেয়। এরপর তারা ছুরিকাঘাত করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর গোয়েন্দা ও কোতোয়ালি পুলিশ অপরাধীদের শনাক্ত করে। এরপর এদেরকে আটকে পুলিশ অভিযান শুরু করে।

বুধবার বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সদরের ধর্মতলা, বসুন্দিয়া আলাদিপুর, বারান্দি মোল্লাপাড়া, সিটি কলেজ ব্যাটারিপট্টি ও পুুলিশ লাইন টালিখোলায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করা হয়। টাকা ভাগবাটোয়ারা হয়ে যাওয়ায় এদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা। এছাড়াও ছিনতাইকালে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, ১টি স্কুল ব্যাগ ও ২টি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকেই হত্যা, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলার আসামি বলে জানিয়েছেন এসপি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদার, তৌহিদুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান, ডিবি ওসি মারুফ আহম্মদ প্রমুখ।

০১ অক্টোবার, ২০২০ at ১৯:০৭:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এএমআর/এমএআর