চৌগাছায় কোন বিনোদন কেন্দ্র দু’টি সিনেমা হলের ১টি গ্যারেজ অন্যটি অটো রাইচ মিল

যশোরের চৌগাছায় নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। শহর ও শহরতলীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আছে বিশাল বিশাল খেলার মাঠ কিন্তু সেখানে হয়না খেলাধুলা। দু’একটি দর্শনীয় স্থান থাকলেও নানা কারণে মানুষ সেদিক থেকেও যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সিনেমা দর্শকদের বিনোদনের জন্য পৌর সদরে এক সময় দু’টি সিনেমা হল গড়ে উঠলেও আজ তা স্মৃতির পাতা থেকে বলাচলে হারিয়ে গেছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি জানান, চৌগাছা সব দিক দিয়ে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেও এখানে বিনোদনের মত জায়গা নির্মাণে বেশ পিছিয়ে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস এই উপজেলাতে নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। সিনেমা দর্শকদের কথা বিবেচনা করে সময়ের ব্যবধানে দুইটি সিনেমা হল (উত্তরণ ও লাইট হাউজ) গড়ে উঠে। কিন্তু এক সময় দর্শক শুন্য হয়ে যায় হল গুলো বাধ্য হয়ে মালিক পক্ষ হল বন্ধ করতে বাধ্য হয়।

প্রায় দেড় যুগ হল দু’টি বন্ধ থাকলেও পুনরায় চালু করার কোন সিদ্ধান্ত কেউ নেয়নি। বর্তমানে লাইট হাউজ নামের সিনেমা হলের মধ্যে তৈরী হয়েছে অটো রাইচ মিল আর উত্তরণ সিনেমা হলের নিচ তলায় তৈরী করা হয়েছে মটর গ্যারেজ, দ্বিতীয় তলা বসত বাড়ি।

সরকার থেকে ঘোষণা এসেছে সবকিছু ঠিক থাকলে করোনায় বন্ধ থাকা দেশের সকল সিনেমা হল গুলো আগামী মাসের ১৬ তারিখে খুলে দেয়া হবে। উপজেলার সিনেমা প্রিয় দর্শকরা সরকারের এমন ঘোষণায় বেশ খুশি কিন্তু এখানে কোন সিনেমা হল না থাকায় তারা বেশ হতাশ।

চৌগাছা পৌর এলাকাতে সুবিশাল ৩টি খেলার মাঠসহ অধিকাংশ ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে খেলার মাঠ, অথচ নানা কারণে বছরের পর বছর সে ভাবে খেলাধুলা হয়না। আর করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে শিশু কিশোররা মাঠে যাওয়া তো ভুলেই গেছে।

চৌগাছার দর্শনীয় স্থান জগদীশপুর গ্রামে স্থাপিত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ তুলা গবেষনা ও বীজবর্ধন খামার, মুক্তদাহ গ্রামের জলাশয় (দোহা), হাকিমপুরের পানিগ্রাম রিসোর্ট সেন্টার, স্বরুপপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহি মসজিদ, কুঠিপাড়ার নীলকুঠি, বেড়গোবিন্দপুর বাওড় ও ডাইনের বিলসহ বেশ কিছু স্থাপনা আজও বিদ্যমান। কিন্তু নানা কারণে মানুষ এখন আর ওই সব স্থানে যায় না।

পৌর কর্তৃপক্ষ শিশুদের বিনোদনের জন্য কপোতাক্ষ নদের পশ্চিমে অর্থাৎ কপোতাক্ষের পুরতান ব্রিজ সংলগ্নে একটি পার্ক নির্মানের কাজ শুরু করেন, কিন্তু আজও তা সম্পন্ন হয়নি। লাইট হাউজ সিনেমা হলের প্রতিষ্ঠাতা মালিক ও বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ৮০/৯০ দশকের দিকে সিনেমা হলের ব্যবসা খুবই ভাল ছিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই ব্যবসায় ধস নামতে শুরু করে।

আমি মনে করি ছবি নব্বই দশকের পর নির্মাতারা যে সকল সিনেমা তৈরী করতে থাকেন, তাতে দর্শক হলে আসা তো দুরের কথা হল বিমুখ হয়ে যায়। মাসের পর মাস ব্যবসায় লুকসান হওয়ায় এক সময় হল বন্ধ করতে বাধ্য হই। হলের স্থানে এখন অন্য ব্যবসা করা হচ্ছে।

চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, সব বয়সের মানুষের জন্য বিনোদন অত্যান্ত জরুরী। সে লক্ষে আমরা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে নদের পাড়ে একটি পার্ক নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশ কাজ হয়েছে, কিন্তু অর্থ অভাবে নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ আছে, খুব দ্রুতই কাজে হাত দেয়া হবে। পার্কটি নির্মাণ হলে তখন শিশু কিশোর এমনকি বয়োবৃদ্ধরা সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২২:৩১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআই/এমএএস