রাজশাহীতে লকডাউনের পর মৎস্যচাষীদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

লকডাউনের লোকসান কাটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন রাজশাহীর মৎস্যচাষীরা। লকডাউনের সময় দাম কমে যাওয়ায় ও ঢাকায় সরবরাহ করার সুযোগ কমে যাওয়ায় মাছ বিক্রি করতে পারেননি চাষীরা। লকডাউন তুলে নেওয়ার পর মাছ বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়েছে।

দাম কিছুটা কম হলেও মাছ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ১৪০ ট্রাক কার্প জাতীয় তাজা মাছ ঢাকায় যাচ্ছে রাজশাহী থেকে। বছরে প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার মাছের কেনাবেচা হয়। তবে গত কয়েকদিন আগে পুকুরে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে একদিনেই রাজশাহীতে মারা গেছে ১২ কোটি টাকার মাছ। এতে বেশ কিছু মৎস্যচাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

চাষীরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মাছের দাম এখনো পূর্বের মতো স্বাভাবিক হয়নি। কেজিপ্রতি ৪০/৫০ টাকা কমে মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া মাছের খাবারের দামও বেশি। তবে লকডাউনের পর যেহেতু পুরোদামে মাছ বিক্রি শুরু হয়েছে, আশা করছি আবার পূর্বের মতো মাছের দাম স্বাভাবিক হবে।

রাজশাহী মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ৫০ হাজার পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরে প্রতিবছর গড়ে ৮১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয় যাদের ৮৫ শতাংশ কার্প জাতীয় মাছ। দেশের মধ্যে কার্পজাতীয় মাছ উৎপাদনে শীর্ষে রাজশাহী। রাজশাহীর চাহিদা পূরণ করে প্রতিদিন গড়ে ১৪০ ট্রাক তাজা মাছ ঢাকায় সরবরাহ করা।

এক একটি ট্রাকে ৭০০ থেকে ৮০০ কেজি মাছ ধরে। মোট মৎস্যচাষী ১৭ হাজার হলেও মৎস্য উৎপাদন, চাষবাস ও বিপণন-বিক্রয়ের সাথে রাজশাহীর প্রায় ৯ লাখ মানুষ জড়িত। বছরে প্রায় ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়। রাজশাহীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা জানান, রাজশাহীতে খামারী, নার্সারি ও হ্যাচারী তিনটি পর্যায়ে মৎস্য চাষ করা হয়।

করোনা ভাইরাসের কারণে মৎস্য খাতের তিনটি পর্যায়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতির তালিকা মৎস্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো প্রণোদনা আসেনি। তবে কৃষিখাতের ৪ শতাংশ হার সুদে প্রণোদনার প্যাকেজ অনেক মৎস্যচাষী পেয়েছেন।

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১৫:২৬:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমআর/এমএএস