করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাই বড় চ্যালেঞ্জ সিনেমা হল মালিকদের

করোনা মহামারির কারণে প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকার পর দেশের সব সিনেমা হল আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর সিনেমা হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে যশোরের সিনেমা হল মালিক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে মেরামত, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কিভাবে দিবেন তা নিয়ে চিন্তিত যশোরের হল মালিকরা। আর এই ক্ষতি কাটাতে সরকারি প্রণোদনা নয়, স্বল্প সুদে ঋণ চায় তারা। সেইসাথে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি পোষাতে ভালমানের সিনেমা চান হল মালিকরা।

যশোর মহিনার সিনেমা হলের কর্মচারী প্রদীপ দাস। যিনি সিনেমার প্রচারণার কাজ করতেন। সিনেমা হল চালু হওয়ার খবর শুনে স্বস্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দীর্ঘ ছয় মাস সিনেমা হল বন্ধ। হল বন্ধ হওয়ার পর থেকে বেকার বসে আছি। বন্ধের পর মালিক দুই মাস বেতন দিলেও তা এখন বন্ধ। তবে সিনেমা হল চালু হলে বেতন দেয়ার আশ^াস দিয়েছেন মালিক।
তিনি আরও বলেন, সিনেমা হলে যারা কাজ করেন, তারা অন্য কোন পেশায় মানিয়ে নিতে পারে না। তবে অনেকেই সংসার চালাতে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
মনিহার সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মিঠু বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সিনেমা হল। এই ছয় মাস বন্ধের ফলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চাইলেই তো বন্ধ হল চালু করতে পারছি না। ব্যবহার করা জিনিস আর পড়ে থাকা জিনিস তো এক নয়। বন্ধ থাকা সিনেমা হল চালু করা অনেক ঝক্কি-ঝামেলার বিষয়। সরকার যদি অনুমতি দেয় তাহলে সিনেমা হল আবার চালু করবো।
তিনি করোনাকালীন ক্ষতি পুষাতে স্বল্প সুদে ঋণ দাবি করেন। সেইসাথে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি পুষাতে দরকার দর্শক। আর দর্শক ফেরাতে চায় ভাল মানের সিনেমা। যদি ঘরের মধ্যে বেড়া দিয়েও ভাল মানের সিনেমা চালানো হয় তাতে দর্শক আসবে। ভাল মানের সিনেমা যদি দেশেই তৈরি হয় তাহলে ভাল। না হলে আমদানি করে সেইটা পূরণ করে দেয়ার দাবি জানান তিনি।
যশোরের অন্যতম আর একটি সিনেমা হল ময়ূরী। বাগআঁচড়ায় অবস্থিত সিনেমা হলটি ১৯৯৯ সালে চালু হয়। সিনেমার এই দুর্দিনেও হলটি তার গৌরব ধরে রেখেছে। সময়ের পালাবদলে বর্তমানে হলটির দায়িত্বে আছেন আশরাফুল ইসরাম বাবু। তিনি বলেন, এমনিতেই বর্তমান সিনেমা হলের অবস্থা ভাল না। তারপরে আবার করোনার জন্য বন্ধ রয়েছে। একটা সেক্টর ছয়-সাত বন্ধ থাকলে তার কোন কিছুই ভাল থাকে না। সিনেমা হল বন্ধ থাকার জন্য সাউন্ড সিস্টেমসহ অনেক যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি পুষাতে স্বল্প সুদে ঋণ সহযোগিতা চান তিনি।
এ প্রসঙ্গে যশোরের সহকারী তথ্য অফিসার এলিন সাঈদ-উর রহমান বলেন, জেলায় ৬টি সিনেমা হলের কার্যক্রম ছিল। করোনার কারণে সেই হলগুলো বন্ধ রয়েছে। সেখানকার কর্মীদের দুর্দিন যাচ্ছে।