শর্ত ভঙ্গ করায় হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

আরোপিত শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল-জামিয়াতুল তাহলিমা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ হতে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সেই আদেশে বলা হয়, কওমী মাদ্রাসা সমূহের দাবীর প্রেক্ষিতে গত ২৪ আগস্ট ২০২০ খ্রি : তারিখে কতিপয় শর্তসাপেক্ষে ( স্বাস্থ্যবিধি মানা সংক্রান্ত) কওমি মাদ্রাসা সমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি আরোপিত শর্ত ভঙ্গ করায় কারিগরি মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এরআগে, গতকাল বুধবার থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আহমদ শফীর বিরুদ্ধে জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক ছাত্রদের বিক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ থেকে মাদ্রাসায় আহমদ শফীর সমর্থক শিক্ষকদের দু’জনের ওপর হামলা এবং অফিস কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা আহমদ শফী এবং তার ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে সরে যাওয়ার দাবি তুলেছে।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক ছাত্ররা বুধবার দুপুরের পর মাদ্রাসায় বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা মাদ্রাসাটির প্রধান বা পরিচালক আহমদ শফির বিরুদ্ধে নানা রকম শ্লোগান দেয়। মি: শফির ছেলে আনাস মাদানীও এই মাদ্রাসার শিক্ষক।

এ সম্পর্কে এএসপি (উত্তর) মশিউদ্দোলা রেজা বলেন, মাদ্রাসা কেন্দ্রিক বেশ কিছু দাবি দাওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। ছাত্ররা মাদ্রাসার ভেতরে অবস্থান করছেন। পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা মাদ্রাসা বাইরে অবস্থান করছে। ছাত্ররা অস্থিতিশীল কোনও পরিবেশ যাতে তৈরি করতে না পারে সেজন্য পুলিশ সর্তক অবস্থায় আছে।

ছাত্রদের দাবিগুলো হলো- অবিলম্বে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করতে হবে। আনাস কর্তৃক অবৈধভাবে অব্যাহতি দেয়া তিনজন সম্মানিত শিক্ষককে পুনর্বহাল করতে হবে। আনাস কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সকল অযোগ্য-অর্থব এবং অসৎ চরিত্রের শিক্ষক ও স্টাফদের ছাটাই করতে হবে। ছাত্রদের ওপর সব ধরনের জুলুম ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আল্লামা আহমদ শফী সাহেব কর্মক্ষম না থাকায় তাকে কার্যকরি মুহতামিম থেকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে একজন ‘মুখলিস, বুযুর্গ ও দক্ষ আলেমকে’ মুহতামিম নিয়োগ দিতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জোহরের নামাজের পর ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করে। মাদ্রাসার গেইট বন্ধ করে তারা ভেতরে অবস্থান নেন। মাঝে মাঝে তারা মাইকে তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ঘোষণা করছেন। তবে এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের কেউ কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এ সর্ম্পকে জানতে হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানীকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম সচিব আল্লামা মুইনুদ্দিন রুহিকে চেষ্টা করা হলে তিনিও মোবাইল রিসিভ করেননি।

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২১:২৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভক/এমএআর