করোনা ভাইরাসের কারখানা শার্শা পল্লী বিদ্যুত অফিস!

যশোরের শার্শা উপজেলায় করোনাকালে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা বৈদ্যুতিক বিলের বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও এসব অভিযোগ নিয়ে গ্রাহকরা প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট অফিসে ধরনা দিচ্ছেন। অনেকে অতিরিক্ত ভিড় দেখে করোনা সংক্রমনের ভয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকে সংক্রমণের কথা ভুলে গিয়ে গাদাগাদি-ঠাষাঠাষি করে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন ঘন্টার পর ঘন্টা।

জানা গেছে, যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীনে শার্শা উপজেলায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৭ জন গ্রাহক রয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত করোনা মোকাবিলায় অন্যান্য অফিসের মতো পল্লী বিদ্যুতের অফিসও ছুটি ছিল। জুন মাসে অফিস খোলার পর পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের ভৌতিক বিল ধরিয়ে দিলে গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এদিকে যারা বিলের কপি রেখে দিয়েছেন তারা অফিসে অভিযোগ করলে হয়তো এর সমাধান পাবেন। কিন্তু যারা এসব কপি সংরক্ষিত রাখেননি। তারা বেশী বিপাকে পড়েছেন।

বেনাপোলের পৌর সভা গ্রামের নজরুলের হিসাব নং (২০৬-৪২৫৫) জানান, তিনি গত ফ্রেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসের বিল পরিশোধ করলেও মে মাসের সাথে পরিশোধকৃত এ দু’মাসের বিল পূনরায় সংযুক্ত করা হয়েছে। শিকড়ী গ্রামের মনিরুল হিসাব নং- (২২২-১৮৪৪) জানান, গত মার্চ মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও মে মাসের সাথে ওই মাসের পরিশোধকৃত বিল বকেয়া দেখিয়ে যুক্ত করা হয়েছে। পুটখালী গ্রামের সাজেদুল ইসলাম হিসাব নং-(২২২-২৪২০) জানান, এ বছরের জানুয়ারী মাসের বিল পরিশোধ করা হলেও মে মাসের বিলের সাথে পূনরায় জানুয়ারী মাসের বিল যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও অনেকের গত তিন মাসের যে বিল হয়েছে তার চেয়ে শুধুমাত্র জুন মাসের বিল বেশি আসছে।

উপজেলার স্থনীয় বাসিন্দা মুনতাজ সরদার জানান, তিনি গত মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করলেও মে মাসের সাথে পরিশোধকৃত মাসের বিল আবার যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া গত এপ্রিল ও মে মাসে মিটার না দেখে মনগড়া প্রায় দ্বিগুন বিল করা হয়েছে। এসব সমস্যার অভিযোগ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ-এর অফিসে গেলে অতিরিক্ত ভীড় দেখে করোনার সংক্রমনের ভয়ে বাড়ি ফিরে আসি।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সহ-সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান এসব সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, এটা শুধু এখানে নয় প্রায় সারা দেশেই একই অবস্থা। করোনার কারণে এপ্রিল ও মে মাসে মিটার রিডাররা বাড়িতে গিয়ে বিল করতে পারেনি। যার ফলে বিলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।এছাড়া সফটওয়ারের ত্রুটির কারনে পরিশোধকৃত বিল আবার যুক্ত হয়েছে। কোন গ্রাহক বিল সংক্রান্ত অভিযোগ করলে তা তদন্ত করে অভিযোগের ভিত্তিতে এসকল বিল সমন্বয় করা হবে। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের সব স্তরে ভৌতিক বিল পাঁচ দিনের মধ্যে সমাধানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১শার্শা জোনাল অফিসের ডিজিএম হাওলাদার রহুল আমিন বলেন, করোনার কারনে বিদ্যুৎ বিল ঘরে বসে গত বছরের বিল দেখে করায় কিছু সমস্যা হয়েছে। সিমিত ভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চলার কারণেও কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে এসব বিল প্রায় সমন্বয় করা হয়েছে। যারা বিল হারিয়ে ফেলেছেন তাদের ডুকুমেন্ট কোথাও না কোথাও রয়েছে। সেগুলো দেখে ঠিক করা হবে। তিনি বলেন ১১৯ জন গ্রাহক এ পর্যন্ত অভিযোগ করেছে এবং তাদের অভিযোগ সমাধান করা হয়েছে। কোন গ্রাহক অভিযোগ করলে তা দ্রুত কার্যক্রম করা হয়ে থাকে।