প্রসূতি নারীকে ভুল রক্ত দিতে গিয়ে তোপের মুখে কথিত চিকিৎসক খলিলুর

দেশ প্রতিবেদক: “ও” পজিটিভ প্রসূতি নারীকে “এ” পজিটিভ রক্ত পুশ করার চেষ্টার ঘটনায় স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েছে কথিত ডাক্তার খলিলুর রহমান। এই নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ভুক্তভোগীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে জানিয়েছে পাশে আছি আমরা নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আবার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য নানা দেনদরবার ও শুরু করেছেন।

গত ২৬ জুন রাতে সদর উপজেলার বসুন্দিয়া মোড়ে মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শাহরিয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, নড়াইল সদর উপজেলার আফরা গ্রামের সাগরের স্ত্রী সুমতি রানী সাত মাসের অন্তস্বত্বা। শারীরিক সমস্যার কারণে গত ২৬ জুন বিকেলে বসুন্দিয়া মোড়স্থ্য মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকে আসেন। রোগী দেখেই কথিত ডাক্তার খলিল বলেছেন রোগীর অবস্থা ভাল নয় তাকে আজই অস্ত্রোপচার (সিজার) করতে হবে। আর তা না হলে প্রসূতি অথবা বাচ্চা মারা যেতে পারে। এজন্য এক ব্যাগ এ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন। রোগীর লোক দিয়ে এক ব্যাগ এ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন বলে। লোক মারফত জানতে পেরে বিনা মূল্যে স্বেচ্ছায় রক্ত দেয়ার জন্য মহুয়া ক্লিনিকে যান শাহরিয়ার পারভেজ। কিন্তু শাহরিয়ার পারভেজের শরীর থেকে রক্ত নেন ডাক্তার খলিল। এরপর ওই রক্ত সুমতি রানীর শরীরে পুশ করার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শাহরিয়ার ক্লিনিকের রেজিস্ট্রারে লেখা দেখতে পান ওই নারীর শরীরে ও পজিটিভ রক্ত। এসময় ও পজিটিভ রোগীকে এ পজিটিভ রক্ত দেয়ার বিষয় খলিলের কাছে জানতে চান পারভেজ। কিন্তু সন্তুষ্ট জনক কোন জবাব দিতে পারেননি ডাক্তার খলিল। পাশাপাশি এলাকায় খলিলের পোষা দুই দালালকে সাথে সাথে মোবাইল করে জানানো হয়। তারা রক্ত দেয়া ভুক্তগেীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

স্থানীয়রা জানান, পাশে আছি আমরা নামে বসুন্দিয়া এলাকায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে। ওই সংগঠনের সদস্য শাহরিয়ার পারভেজ। তিনি সংগঠনের আহবায়ক আবির হোসেনকে বিষয়টি জানান। সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনা বসুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম খান রাসেলকে অবহিত করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন মহলের দেনদরবার শুরু করে কথিত ডাক্তার খলিল।

সূত্রে আরো জানা গেছে, ওইদিন ২৬ জুন রাতেই ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রসূতি সুমতি রানীকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করান ডাক্তার খলিল। আজও সেই প্রসূতি খলিলের মহুয়া ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুমতি রানীর মামা কৃষ্ণ কুমার।

এব্যাপারে বসুন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিজায়াজুল ইসলাম খান রাসেল বলেছেন, মহুয়া ক্লিনিকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পাশে আছি আমরা নামক সংগঠনের পক্ষ থেকে পেয়েছি। বিষয়টি অত্যান্ত দু:খজনক। তিনি আরো বলেছেন কথিত ডাক্তার খলিল এবং মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহিন বলেছেন, ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকটি সীলগালা করে দেয়া হয়। তারপর আবার চালু করেছে সেটা আমাদের জানা নাই। তবে প্রসূতি নারীকে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় তদন্ত করে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।