চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ

চার বছরেও পরিষদে যেতে পারেনি ইউপি সদস্য। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জাল স্বাক্ষরে বরাদ্দ আত্মসাৎসহ সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি’র অভিযোগ।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগনের ভোটে ইউপি সদস্য হিসেবে বিজয়ী হওয়ার কয়েক মাস পড়েই চেয়ারম্যান আমাকে বলছে তুই আর পরিষদে আসবিনা।
মৌখিকভাবে বলছে আজ থেকে তুই সাসপেন্ড (সাময়িক বরখাস্ত)। সেই থেকে আজ অবধি ইউপি সদস্য হিসেবে পরিষদে যেতে পারিনি।
এর আগে কয়েক দফা পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে তুই আমাদের পরিষদের কেউ না। শুধু তাই নয় ; গত চার বছরে কোন প্রকার সরকারি বরাদ্দ আমার মাধ্যমে বিতরণ করা হয়নি।
আমাকে না জানিয়ে স্বাক্ষর জাল করে নিজের ইচ্ছা মতো আমার বরাদ্দ আত্মসাৎ করে আসছে চেয়ারম্যান।

বুধবার বেলা ১১টায় এভাবেই মনের মধ্য জমানো দীর্ঘদিনের ক্ষোভ তুলে ধরলেন বগুড়ার শিবগঞ্জের দেউলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ওবাইদুল ইসলাম।
কারন জানতে চাইলে তিনি জানান, রহবল উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

আরো পড়ুন :
দুমকিতে এক ব্যক্তির আত্মহত্যা
কেশবপুরে নার্সের দেহে করোনা শনাক্ত, আক্রান্ত ১৩ জনের মধ্যে ১০ জন সুস্থ
কেশবপুরে শাহীন চাকলাদারের পক্ষে নাসির উদ্দীনের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

তিনি আমাকে তার পক্ষে কাজ করতে না বলায় আমি চেয়ারম্যানের বিপক্ষের প্যানেলকে সমর্থন করি। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যানের প্যানেল পরাজিত হওয়ায় চেয়ারম্যান আমার উপর ক্ষুব্ধ হন।
ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার কয়েকদিন পর পরিষদে গেলে তিনি আমাকে সাসপেন্ড করেছেন বলে পরিষদ ত্যাগ করতে বলেন।

এসময় তিনি বলেন, প্রতি বছর এলজিইডি থেকে ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ আসে। যা নিজ নিজ অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট,ব্রিজ-কালভাট তৈরির জন্য প্রত্যক সদস্যদের মাঝে ভাগ করে দেয়া হয়।
কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাকে একটি টাকাও এলাকার উন্নয়নের জন্য দেয়া হয়নি। শুধু তাই নয়; ভিজিএফ থেকে শুরু করে সব ধরনের ভাতা কার্ড আমার মাধ্যমে একটিও বন্টন করেনি।

এদিকে সোমবার (১১ মে) দুপুরে চেয়ারম্যানের এসব অভিযোগ সম্পর্কে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে ঐ রাতে চেয়ারম্যানের ছেলেসহ ৬/৭ জন আমার বাড়িতে এসে গালি গালাজ ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্যর সহধর্মীয় রুজিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যানের কারণে পরিষদে যেতে পারে নাই। বর্তমান করোনা ভাইরাস এর কারণে এ ওয়ার্ডের অসহায় গরীব, দুঃস্থদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। গত ১২ মে রাতে চেয়ারম্যান এর ছেলে সহ তার ক্যাডার বাহিনী বাড়িতে এসে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে। এখন আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগিতেছি।
বোয়ালমারি বাসিন্দা মকবুল, আব্দুর রশিদ, সনজু, জানান চেয়ারম্যান এর হুমকি ধামকির কারণে ইউপি সদস্য ওবাদুল ইসলাম পরিষদে যেতে না পারায় আমরা ৪ গ্রামের সাধারণ মানুষ করোনা ভাইরাস এর কারণে কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছি।

যোগাযোগ করা হলে দেউলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই প্রধান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জানান,ওবাইদুলকে পরিষদে আসতে নিষেধ করিনি। বরং সচিবের মাধ্যমে ফোন দিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি। সে একজন জন প্রতিনিধি হিসাবে পরিষদে কেন আসে না তা আমার বোধগম্য নয়।

এসময় জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে ঐ ইউপি সদস্যকে ছাড়াই তার যাবতীয় বরাদ্দ উত্তোলনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি নাকোচ করে দেন।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মে ১৩, ২০২০ at ১৮:২১:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসএম/এএডি