জমিজমা ও টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কেশবপুরে চরম উত্তেজনা

জমিজমা ও টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে যশোরের কেশবপুরের টিটাবাজিতপুর গ্রামে দুটি পরিবারের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে শায়েস্তা করতে নানা রকম চক্রান্ত চালাচ্ছে। এতে করে গ্রামটি অশান্ত হয়ে উঠেছে। যে কোন মুহুর্তে হত্যাকান্ডের মত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে গ্রামবাসী।

গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ সরদার ও আনোয়ার আলী দুই ভাই। এরমধ্যে আব্দুর রশিদের চার ছেলে এবং আনোয়ার আলীর ছয় ছেলে। দীর্ঘদিন এই ভাই ও তাদের ছেলেরা একই বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু তাদের মৃত্যুর পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাচাতো ভাইদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ূন কবীরের সাথে আনোয়ার আলীর ছেলে সেলিম রেজা মনির সাথে টাকা পয়সা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে বাড়ির মধ্যে দেওয়াল তৈরি করে বিভক্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি। হুমায়ূন কবীর দাবি করে তিনি সেলিম রেজা মনির কাছে টাকা পাবে। আবার সেলিম রেজা মনির দাবি তিনি হুমায়ূন কবীরের কাছে টাকা পাবেন।

আরো পড়ুন :
বসুন্দিয়ায় ২০০ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিলেন এমপি নাবিল
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১৫ লাখ টাকা দিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
রুদ্রপুরে লাশ নিয়ে নোংরা রাজনীতি : ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানোর চেষ্টা

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, সেলিম রেজা মনি খুবই খারাপ প্রকৃতির লোক। নেশাখোরদের সাথে তার আড্ডা। মানুষকে টাকা পয়সা দিয়ে হুমায়ূনদের বিভিন্ন ভাবে হয়রাণি করে। গ্রামের কোন মানুষ তাদের দেখতে পারে না।

সেলিম রেজা মনির শ্রমিক মুনছুর বলেন, তিনি সেলিম রেজা মনির ফার্মে কাজ করেছেন। কিন্তু তার শ্রমের দেড় লাখ টাকা দেয়নি মনি। টাকা চাইতে গেলে মারপিটসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। ভয়ে কথা বলতে সাহস পাননা।

মনিরুল ইসলাম নামে আরও এক শ্রমিক বলেন, তিনি ৮৫ হাজার টাকা পাবেন মনির কাছে। টাকা না দিয়ে টালবাহানা করছে। টাকা চাইতে গেলে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। খুন জখমের হুমকি দেয়।

হুমায়ূনের মেঝ ভাই আসাদুজ্জামান মুকুল বলেন, সেলিম রেজা মনি একজন প্রতারক। টাউট। তার ভাই হুমায়ূন সুদে করে সাতক্ষীরা থেকে টাকা এনে মনি দিয়েছিলো। কিন্তু মনি সে টাকাও দেয় না, সুদের লাভও দেয় না। এখন পর্যন্ত তার ভাই সেই টাকার সুদ টানছে। এছাড়া টাকা নিয়ে চেক দিয়েছিলো। কিন্তু সে টাকাও দেয়নি। পরে চেক ডিজঅনার মামলা করা হয়। সেই মামলা আদালতে চলছে।

তিনি আরও বলেন, উল্টো তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়ে হয়রাণি করা হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে কোন সত্যতা পায়নি। এরপরও মনি তার ছলচাতুরি অব্যাহত রেখেছে।

হুমায়ূন কবীর জানান, তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং ঠিকাদার। ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু সেলিম রেজা মনি তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে টালবাহানা করে আসছে। টাকা না দেওয়ার ফন্দি ফিকির আটতে থাকেন। টাকা চাইলে বাড়ির উপর মারতে আসে। তার ভয়ে আমরা বাড়ি থাকতে পারি না। বাড়ির মহিলাদেরকে বেইজ্জতি করে। বাড়ির মহিলাদের লাঞ্ছিত পর্যন্ত করেছে। তারপরও আমরা কিছু বলি না। আমরা সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সম্প্রতি আমার আমার ছেলে ও স্ত্রীকে এবং মেঝ ভাইকে মারার জন্য দাবড়ায়। পরে আমরা পাশে বড় ভাই বাড়িতে গিয়ে উঠে। পরে পুলিশের খবর দিলে তারা এসে আমাদেরকে বাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে যায়।

অভিযোগের বিষয়ে সেলিম রেজা মনির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হুমায়ূন তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা নিয়ে দেয়নি। উল্টো আমার নামে চেক ডিজঅনার মামলা দিয়ে হয়রাণি করে আসছে। সে আমার ও আমার ভাইদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রাণি করে আসছে। তারা কয় ভাই শিক্ষিত।

মে ১০, ২০২০ at ১৭:১৯:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/একে/এএডি