যশোরে রেশন কার্ডের মাধ্যমে ত্রাণ পাবে ৭৫ হাজার পরিবার

যশোরে ৭৫ হাজার দরিদ্র পরিবার ত্রাণ সহায়তা পেতে যাচ্ছে। বর্তমানে জেলার সবকয়টি উপজেলা এবং সবকয়টি পৌরসভায় সুবিধাভোগী এসব পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। করোনা সংকটে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব পরিবার কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডযুক্ত রেশন কার্ডের মাধ্যমে এই ত্রাণ সহায়তা পাবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে জেলায় কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র ও অভাবী ৭৫ হাজার পরিবার রেশন কার্ডের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা পাবে। যতদিন করোনার প্রভাব থাকবে ততদিন এই ত্রাণ সহায়তা চলবে।

আরো পড়ুন :
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের এক কিংবদন্তী চট্টলকন্যা কল্পনা দত্ত
করোনা : গত ৩ দিনে যশোরে কোন রোগী শনাক্ত হয়নি
কেশবপুরে কর্মহীনদের মাঝে উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্থিক সহায়তা প্রদান

সূত্র জানায়, বর্তমানে পরিবারভিত্তিক এসব মানবিক সহায়তা কার্ডের তালিকা করা হচ্ছে। এসব কার্ডে ১২টি তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হচ্ছে। পরিবার প্রধানের নাম, বাবা বা স্বামীর নাম, জন্ম তারিখ, বয়স, লিঙ্গ, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর, মোবাইল নম্বর এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যার (পুরুষ, মহিলা, হিজড়া, শিশু প্রতিবন্ধী আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে) তথ্য নেওয়া হচ্ছে। আগে কোনও সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় থাকলে তার নাম, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানাও সংগ্রহ করা হচ্ছে।

প্রত্যেককে কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডযুক্ত কার্ড দেওয়া হবে। এই কার্ডে তার বিস্তারিত তথ্য থাকবে। বিভিন্ন কর্মসূচির আলাদা রংয়ের কার্ড থাকবে। এক কর্মসূচির কার্ড দিয়ে অন্য কর্মসূচির সুবিধা নেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয়ভাবে একটা সফটওয়্যার থাকবে। সেখান থেকে সারাদেশের সুবিধাভোগীদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে জানা যাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অন্যকোনও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সহায়তা পাচ্ছেন কি না।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রদের কাছে সুবিধাভোগী এসব দরিদ্র পরিবারের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর তা অনলাইনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে তালিকা অনুমোদনের পর এই ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হবে। প্রথম দফায় কার্ড প্রতি ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, যশোর সদর উপজেলায় ১০ হাজার ৭০০, মণিরামপুর উপজেলায় ১১ হাজার, শার্শা উপজেলায় সাত হাজার ৭০০, চৌগাছা উপজেলায় ছয় হাজার ৪০০, ঝিকরগাছা উপজেলায় সাত হাজার ৩০০, অভয়নগর উপজেলায় পাঁচ হাজার ৫০০, বাঘারপাড়া উপজেলায় ছয় হাজার এবং কেশবপুর উপজেলায় ছয় হাজার ৫০০টি পরিবার এই ত্রাণ সহায়তা পাবে। এছাড়া, যশোর পৌরসভা আট হাজার ১০০, নওয়াপাড়া পৌরসভা এক হাজার, চৌগাছা পৌরসভা ৬০০, মণিরামপুর পৌরসভা এক হাজার, বাঘারপাড়া পৌরসভা ৫০০, বেনাপোল পৌরসভা এক হাজার, ঝিকরগাছা পৌরসভা ৭০০ এবং কেশবপুর পৌরসভায় এক হাজার পরিবার রেশন কার্ডের মাধ্যমে এই ত্রাণ সহায়তা পেতে যাচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘জেলার ৭৫ হাজার দরিদ্র পরিবার কিউআর কোডযুক্ত রেশন কার্ডের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা পাবে। করোনার প্রভাব থাকাকালে এই ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলবে। জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার মেয়রদের কাছে সুবিধাভোগী এসব দরিদ্র পরিবারের তালিকা চাওয়া হয়েছে। রবিবার তালিকা পাঠানোর শেষদিন ছিল। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত তালিকা পাওয়া যায়নি। তালিকা পাওয়ার পর তা অনলাইনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদনের পর আগামী সপ্তাহে এই ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হবে।’

মে ০৪, ২০২০ at ২০:৪২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/বিটি/এএডি