ফটোসাংবাদিক কাজলের অনুপ্রবেশ মামলায় জামিন, ৫৪ ধারায় জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ

বেনাপোল স্থলবন্দরের শূন্যরেখা থেকে অবৈধ অনুপ্রেবেশের অভিযোগে আটক হওয়া নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।

এছাড়া, কাজলের বিরুদ্ধে রাজধানীর তিনটি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে তিনটি মামলা রয়েছে, ফরোয়ার্ডিংয়ে বেনাপোল থানা পুলিশ তাও উল্লেখ করে। এর সঙ্গে যশোর কোতয়ালী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৪ ধারায় একটি মামলা দেওয়া হয়। আদালত ৫৪ ধারার মামলায় কাজলকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আরো পড়ুন :
শ্রীপুরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষন : ধর্ষক আটক
দুই মাস সব ধরণের ঋণের সুদ স্থগিত
রাঙ্গুনিয়ার প্রথম করোনা রোগী লক্ষণ ছাড়াই শনাক্ত

এর আগে নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের শূন্যরেখা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারত থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা করেছে বিজিবি। রোববার (৩ মে) সকালে বেনাপোলের রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের এক সদস্য কাজলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অভিযোগে মামলা করে (মামলা নম্বর ৫) বেনাপোল থানায় সোপর্দ করেন। এই মামলায় রবিবার দুপুরে তাকে যশোরের আদালতে সোপার্দ করে বেনাপোল বন্দর থানা পুলিশ। বিকালে তাকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়।

যশোর আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এএসআই সুবোধ ঘোষ জানান, সাংবাদিক কাজলকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে পুলিশ তার নামে রুজু হওয়া মামলাগুলোর কথা তুলে ধরে। যশোর কোতয়ালী থানা পুলিশের ৫৪ ধারায় করা মামলায় তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

কাজলের আইনজীবী দেবাশীষ দাসকে উদ্ধৃত করে তার সহকারী শিক্ষানবিস আইনজীবী সুদীপ্ত ঘোষ জানান, পুলিশ কাজলের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা ছাড়াও রাজধানীর তিনটি থানায় আরো তিনটি মামলা থাকার কথা উল্লেখ করে। এই তিনটি মামলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গির চর থানায় সাংবাদিক কাজলের নামে গত ৯, ১০ ও ১১ মার্চ মামলা তিনটি হয়। আদালত এই মামলা তিনটি সম্বন্ধে কোনো আদেশ দেননি।

সদর আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ পুলিশের এটিএসআই সন্তোষকুমার বিশ্বাস জানান, ৫৪ ধারায় রুজু করা মামলায় আদালত বিকেলে সাংবাদিক কাজলকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী সন্ধ্যার আগেই তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, সাংবাদিক কাজল গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় তার ‘পক্ষকাল’ অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই দিন সন্ধ্যায় কাজল যখন অফিসে ঢুকেছিলেন তখন রাস্তার পাশে রাখা তার মোটরসাইকেলের কাছে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখা যায় ভিডিও ফুটেজে। পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় তার পরিবার। ১৮ মার্চ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সাংবাদিক কাজলের সন্ধান চাওয়া হয়। ওই রাতেই কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হওয়ার পর তার সন্ধানের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক দফা কর্মসূচি পালন করেছেন তার সাংবাদিক সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার মধ্যরাতে কাজলের ‘সন্ধান’ মিলেছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী নয়নকে জানানো হয়। ভোরে কাজলের ছেলে মনোরম আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে যশোরের আসেন।

মে ০৩, ২০২০ at ১৯:৫৫:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/একে/এএডি