শ্রমিক সংকটে ধান কাটলেন চৌগাছা উপজেলা ছাত্রলীগ

যশোরের চৌগাছায় ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটা শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাইরে জেলা থেকে অত্র উপজেলায় শ্রমিকরা আসতে পারছে না। ফলে ধান কাটতে ও ফসল ঘরে তুলতে হিমশিম খাচ্ছেন এলাকার কৃষকরা। এই অবস্থায় উপজেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী কৃষকদের ধান কাটার সিদ্ধান্ত নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার ফুলসারা ইউনিয়নের রিকশা চালক হবিবর রহমানের ২০শতক জমির ধান কেটে সহযোগিতা করেছে । বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন এলাকার কৃষকরা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দিয়েছেন সকলকে কৃষকের পাশে থাকতে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নির্দেশনায় কৃষকদের ধান কাটতে কাজ করছে ছাত্রলীগ।

আরো পড়ুন :
নাটোর জেলা লকডাউন ঘোষণা
শার্শায় এক নবজাতক উদ্ধার
লক্ষ্মীপুরে মেডিকেল কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

কয়েকজন কৃষক জানান, রোপা আমন ও ইরি-বোরো ধান মৌসুমে অত্র উপজেলাতে কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, রংপুর জেলা থেকে আগত শ্রমিকদের দিয়ে ধান কাটা, ঝাড়াইসহ ফসল ঘরে তোলার কাজ করা হয়। কিন্তু এবার ইরি-বোরো মৌসুমে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গণপরিবহণ বন্ধ। ফলে বাইরে জেলা থেকে ধান কাটার শ্রমিকরা আসতে পারছেনা। এতে কৃষকরা উদ্বিগ্ন ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় শ্রমিকরা মাঠে কাজ করলেও ঝড় ও বৃষ্টির আগেই সকল ধান ঘরে তুলতে পারবেনা বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা।

এই অবস্থায় কৃষকদের মাঝে সাহস যোগানোর জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরীর সার্বিক তত্বাবধানে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ধান কাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ফুলসারা ইউনিয়নের রিকশা চালক হবিবর রহমানের ২০শতক জমির ধান কাটায় অংশগ্রহণ করেন যশোর এম এম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতা সুমন সরকার, চৌগাছা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রুবেল হুসাইন, লিখন হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা সোহেল আহম্মেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান রাথিক, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, শাহাবুদ্দিন, সোহেল রানা, মনিরুল, রাব্বি মৃধা, ইব্রাহিম প্রমুখ।কৃষক হবিবর রহমান বলেন, আমি ভাবতেও পারিনি ছাত্রলীগের ছেলেরা রোজা থেকে আমার ধান কাটবে। তাদের সহযোগিতায় আমি খুব খুশি হয়েছি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রইসউদ্দীনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড় বৃষ্টি না হলে ইরো-বোরো ধানের আশানুরুপ ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবার ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার মেট্রিক টন। তিনি বলেন, করোনা সমস্যার কারনে ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় আছেন এটা সত্য। কৃষকের কথা ভেবে ইতোমধ্যে মাননীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অবঃ) অধ্যাপক ডাঃ নাসির উদ্দিন স্যারের মাধ্যমে ৬ জন কৃষকের মাঝে ৬টি হারভেস্টার ও রিপার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এই মেশিন ব্যবহার শুরু হয়েছে। আশা করা যায় ধান কাটার ক্ষেত্রে কৃষকদের অনেকটা সহযোগিতা হবে। ছাত্রলীগের ধান কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অবশ্যই ভালো। এই ধান কাটার মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলনে কিছুটা প্রভাব ফেলতে সহযোগিতা করবে। শিক্ষিত বেকার যুবকরাও উৎসাহিত হবেন।

এপ্রিল ৩০, ২০২০ at ১৮:১৫:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমএস/এএডি