কোয়ারেন্টাইনে ৩ দিন পানি খেয়ে বেঁচে আছেন বৃদ্ধ সোবাহান

পটুয়াখালীর দুমকিতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অঘোষিত লকডাউনের ৭দিন পেরিয়ে গেলেও খালের পাড়ে প্লাষ্টিকের ডেরায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অসহায় বৃদ্ধ সোবাহানের (৬৭) খোঁজ রাখেনি কেউ। দোকান পাট বন্ধ থাকায় চিরে মুড়িও তাঁর ভাগ্যে জোটেনি । টানা ৩দিন যাবৎ শুধুমাত্র পানি পান করেই দিনপার করছেন তিনি। এর মধ্যে প্রতিবেশী একজন সুহৃদের দেয়া দু’পিস কেক খেয়ে কোন মতে বেঁচে আছেন। খুদার জ্বালায় উঠতে পারছেন না।

গত বুধবার (২৫ মার্চ) থেকে দুমকি উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক অঘোষিত লকডাউনে শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যায়। এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারী বরাদ্দে নি¤œ আয়ের শ্রমজীবি ও অসহায় দরিদ্র পরিবারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার বিতরণ করা হয়। কিন্ত বিগত ৭দিন পেরিয়ে গেলেও থানা ভবনের ১শ’ মিটারের মধ্যে পরিত্যক্ত ভিটায় প্লাষ্টিকের ডেরায় থাকা ছিন্নমূল অসহায় বৃদ্ধ সোবাহানের কপালে সেই খাবার জোটেনি।
আরও পড়ুন: করোনা প্রতিরোধ সচেতনতা বাড়াতে চৌগাছায় ডিসি-এসপির নেতৃত্বে মহড়া

দরিদ্র-পীড়িত অসহায় বৃদ্ধ সোবাহান হাওলাদার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাবা করোনায় কি করবে, না খেয়েইতো মরতে হবে। যত দিন শক্তি আছিল, কাম কইরা খাইছি, এখন শক্তিও নাই, খাইতেও পারি না। দোকান পাট খোলা থাকলে মানুষের কাছে চাইয়ে চিন্তে খাইতাম। করোনার কারনে শহরের সব দোকান বন্ধ থাকায় না খেয়েই থাকতে হয়। তিনি দু:খ করে বলেন, কত ভালো মানুষ কতভাবে সাহায্য পায়, আর আমি না খাইয়া মরি। কেউ আমার খোঁজ নেয় না।

এ বিষয়ে শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম সালাম বলেন, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের দেয়া তালিকায় সোবাহানের নাম না থাকায় খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়নি। আজকেই বিকেলের মধ্যে তার নামে ১০কেজি চাল পৌছানোর ব্যবস্থা করবো।

দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মেহেদী হাসান বলেন, থানার কাছেই এমন মানবেতর অবস্থায় বসবাস করছে তা আমার জানা ছিল না। যতদ্রুত সম্ভব তাকে সাহায্য সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

দুমকি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-ইমরান বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আজকেই সরেজমিন পরিদর্শন করে খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।

দেশদর্পণ/জেইউ/এসজে