নববর্ষের সব অনুষ্ঠান বন্ধ, ছুটি বাড়বে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এবার পহেলা বৈশাখের প্রোগ্রাম হবে না। পরিস্থিতির কারণে আমাদের বড় বড় জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।

একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতে সরকারের ঘোষণা করা ছুটির মেয়াদ সীমিত আকারে বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবার গণভবন থেকে সকাল ১০টায় দেশের ৬৪ জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার যেহেতু আমরা সব অনুষ্ঠানই বাদ দিয়েছি। ব্যাপকভাবে লোকসমাগম হয় সে ধরনের অনুষ্ঠান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন ডিজিটাল যুগ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে গান-বাজনা এবং উৎসব সবই আপনারা পালন করতে পারেন। পরিস্থিতির কারণেই আমরা এবার পহেলা বৈশাখ উদযাপন করব না ।এই পহেলা বৈশাখ আমরাই চালু করেছিলাম কিন্তু প্রয়োজনে আমাদেরকে এটা বন্ধ করতে হল। এটা শুধু জনগণের কল্যাণের জন্যই করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমাজে অনেক বিত্তশালী আছেন, তারা যে যেভাবে পারেন প্রশাসনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তালিকা অনুযায়ী গরিব শ্রমিক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, মজুরদের সহযোগিতা করবেন। সাহায্য করার ক্ষেত্রে সরকারিভাবেও অনেক ত্রাণ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনোরকম দুর্নীতি এবং অনিয়ম যেন না হয়। কোনো ধরনের দুর্নীতি এবং অনিয়ম হলে সেখানে কিন্তু এতটুকু ছাড় দেয়া যাবে না। মানুষের দুঃসময়ে সুযোগ নিয়ে কেউ সম্পদশালী এবং অর্থশালী হয়ে যাবেন সেটা মেনে নেয়া হবে না। আগেই আমি সতর্ক করে দিচ্ছি। এরপরেও যদি কেউ করেন তাকে কিন্তু আমি ছাড়ব না। কাজেই এটা যেন ঠিক থাকে।
আরও পড়ুন: করোনা: বিশ্বে মৃত্যু ৩৭ হাজার, আক্রান্ত পৌনে ৮ লাখ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আছেন তাদের সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। এর বাইরে যারা অতিরিক্ত আছেন তাদের তালিকা পৃথকভাবে করতে হবে। তাদের কাছে প্রয়োজন হলে আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ করব। আমাদের কোনো অভাব নেই। যথেষ্ট খাদ্য মজুত আছে। আমরা যথেষ্ট খাদ্য দিতে পারব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাইনা আমাদের দেশের মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাক। আমাদের আরেকটা বিষয়ে নজর দিতে হবে তাহল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন স্থবির হয়ে না পড়ে। আরেকটা বিষয় যেটা হচ্ছে সেটা কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু এরপরে আর একটা ধাক্কাও আমাদেরকে সামাল দিতে হবে। সারাবিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেমে গেছে। সামনে বিরাট অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। সেই মন্দা মোকাবিলায় চিন্তা ভাবনা আমাদের এখন থেকেই করতে হবে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটা হল খাদ্য নিরাপত্তা। আমাদের একটা সুবিধা হল আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। স্বাধীনতার পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশে ফেরেন তখন সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, এই বিধ্বস্ত দেশ আপনি কীভাবে গড়ে তুলবেন। তখন বঙ্গবন্ধু উত্তর দিয়েছিলেন আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে। এই মাটি এবং মানুষকে নিয়ে আমরা এই দেশ গড়ে তুলব। আমাদেরও সেই কথা। আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে। এখানে কৃষিমন্ত্রী আছেন তাকে আমি বলব আমাদের খাদ্য উৎপাদন যেন অব্যাহত থাকে। এ বিষয়ে সবাইকে নজর রাখতে হবে। কারো কোনো জমি, পুকুর, ডোবা-নালা কোনোকিছুই যেন পড়ে না থাকে। প্রত্যেকটি স্থানে আমরা যদি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে আমরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করতে পারব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাছ, তরিতরকারি, ফসল যে যেভাবে পারেন চাষ করবেন। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন তা এখন থেকেই করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফসল ফলানোর জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা অব্যাহত রাখবেন।

দেশদর্পণ/এসজে