বিলিনের পথে শিবগঞ্জের নদ-নদী

শিবগঞ্জ উপজেলার বুকচিরে প্রবাহীত প্রধান নদ-নদী গুলোর অস্তিত্বই আশংকাজনক। উপজেলার করতোয়া ও গাংনাই নদী এবং একটি নদ নাগর। উপজেলার নদ-নদী গুলো কালের আবর্তে বিলিনের পথে। নদীতে পানি নেই তাই নদী দখল হয়ে আবাদী জমি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। উপজেলার অর্থনীতির প্রাণশক্তি হল এসব নদ-নদী আর এর জন্যই এ অ লের জমি যথেষ্ট উর্বর।

সরেজমিন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গুজিয়াহাট হয়ে মহাস্থান বন্দর এলাকায় করতোয়া নদী, কিচক বন্দর হয়ে শিবগঞ্জ হাট এলাকায় গাংনাই নদী এবং নাগর বন্দর হয়ে মাজিহট্ট এরাকার উপর দিয়ে প্রবাহীত নাগর নদ। এখন এসব নদীর অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে। শুকিয়ে গেছে এই সব নদ-নদী । ধান ও আলু চাষ হচ্ছে নদীতে। কোন কোন স্থানে হাটু পর্যন্ত পানি আছে। এলাকার প্রবীণ লোকেরা জানান, আগে এই সব নদ-নদীতে সারা বছর পানি থাকতো। পালতোলা নৌকা চলতো। মাছ ধরে অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করতো। অনেক ব্যবসায়ী তাদের মালপত্র নিয়ে এই নদী দিয়েই যাতায়াত করতো। এখন নদীর ছোট-বড় মাছ আর চোখেই পড়েনা।
আরও পড়ুন: ধসে গেছে রৌমারী শহররক্ষা বাঁধের ৩৮০ মিটার

স্বাভাবিকভাবেই এই নদ-নদীগুলি এভাবে মরে যেতে থাকলে তার প্রভাব পড়বে কৃষি এবং তদুপরি দেশীয় অর্থনীতির ওপর। কারণ নদী মরে যাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বহুমূখী। একদিকে যেমন, শুকনো মৌসুমে জল না থাকার কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য মিষ্টি-জলের মাছ, অন্যদিকে, কৃষিকাজ সেচের উপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠায় বেড়ে চলেছে ব্যয়। উপজেলার নদ-নদী এভাবে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত হতে থাকলে নাম ছাড়া কোন অস্তিত্বই খুজে পাওয়া যাবেনা। আর মিষ্টি জলের প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাটিও হারিয়ে ফেলছে তার স্বাভাবিক গুণ। এসব নদ-নদীতে পলি ও বালু জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন মৃতপ্রায়। ফলে এ অ লের কৃষির সেচ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে এবং নদীর তলদেশের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে অল্প পরিমাণ জলেই দেখা যায় বন্যা।

নদী মরে যাবার কারণে শুধু মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ, হারিয়ে যাচ্ছে মাছ, জলচর পাখি, উভচর, সরীসৃপ প্রাণী। যার পরোক্ষ প্রভাব ঘুরে ফিরে আবার মানুষের উপরই পরতে বাধ্য। তাই প্রয়োজন নদীর এই মরণ প্রক্রিয়াকে থামানো। নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে তার চলার পথ।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান, পওর বিভাগ, বাপাউবো বগুড়া বলেন, করতোয়া নদী খনন এবং এ দুই পাড় নির্মানের বিষয়ে প্লানিং কমিশনে একটি প্রকল্প দেয়া আছে। নাগর নদ নিয়ে বগুড়া ও সিংড়া যৌথভাকে একটি খসড়া পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

দেশদর্পণ/এসএম/এসজে