শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী শামীমের অন্যরকম মানবতাবোধ

‘ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ’ ‘মানুষের জন্য মানবতা, মানবতার জন্যই মানুষ’ সারাদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে যে সামান্য সাহায্য-সহযোগিতা পায়, তা নিজে না খেয়ে অন্যকে নতুন শার্ট, গেঞ্জি ও প্যান্ট কিনে দিয়েই খুশি হয় শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী শামীম আহম্মেদ (২৫)।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ওয়ালিয়া বাজরে একটি নতুন শার্ট কিনে শকিল আহম্মেদ নামের এক ছেলে কে পরিয়ে দেন শামীম আহম্মেদ। যার নিজের চিকিৎসা ও সহযোগিতার প্রয়োজন কিন্তু সে অন্যকে সহযোগিতা করছে, শামীমের এই মানবতাবোধ দেখে একটি ছবি তুলেন ও শামীমের সম্পর্কে স্থানীয়দের নিকট থেকে খোঁজ নেয় দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক আশিকুর রহমান টুটুল। এসময় স্থানীয়রা জানান, ‘লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় ময়না গ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে শামীম।’

বড় ময়না গ্রামে গিয়ে জানা যায়, শামীম জন্ম থেকে একজন শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী। তারা দুই বোন ও এক ভাই। বাবা একজন দিনমজুর ছিলেন, স্ট্রোক করে প্রায় ১২ বছর আগে মারা যান।

বাবার মৃত্যুর পর মা শামছুন্নাহারও স্ট্রোক করে বর্তমানে বিছানায় অচল অবস্থায় তার মেয়ের বাড়িতে দিনানিপাত করছেন। নিজের বলতে বাবার একটি মাটির দেওয়াল ঘর ছিলো বর্তমানে তাও অযতেœ ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। শামীমের আশ্রয় হিসেবে চাচি মাজেদা বেগমই তার দেখাশোনা করে। যে নিজে কথা বলতে পারে না, কেউ মুখে খাবার তুলেনা দিলে না খেয়ে থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: রাঙ্গুনিয়ায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তথ্যমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা

অন্যের সহযোগিতা ছাড়া যে নিজের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারে না, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাচল করতে পারে না, সেই অসহায় শামীম সারাদিন অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরে যে দুই টাকা সহযোগিতা পায় নিজে না খেয়ে তাই দিয়ে দোকান থেকে নতুন পোশাক কিনে মানুষ কে পরাতে ভালোবাসে, খুশি হয়। শামীম যাকে ভালোবেসে পোশাক কিনে দেয় যদি সে তার দেয়া পোশাক না নেয় তা হলে শামীম কাঁদে।’ এযেনো মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, অন্যরকম মানবতাবোধ।’

শামীমের নিকট থেকে নতুন পোশাক পেয়ে শাকিল আহম্মেদ জানান, ‘আমি শামীমের এই ভালোবাসা ও মানবতাবোধে মুগ্ধ।

এ বিষয়ে ময়না গ্রামের ওয়ার্ড সদস্য হারুনর রশিদ বলেন, ‘শামীম খুব ভালো মনের মানুষ। শামীমের নামে একটি প্রতিবন্ধীকার্ড করে দেয়া হয়েছে।’

‘সরকারিভাবে শামীমের দেখা-শোনা ও চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।’

দেশদর্পণ/এআরটি/এসজে