‘যবিপ্রবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সনদ জাল’ দেড় মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়নি

‘যবিপ্রবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সনদ জাল’ এই শীর্ষক প্রতিবেদন ১১ ডিসেম্বর দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। তারপর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ওই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও দেড় মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়েনি।

জানা গেছে, ‘যবিপ্রবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সনদ জাল’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর যবিপ্রবির ডিনস কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মো: আনিছুর রহমান আহ্বায়ক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: ইকবাল কবির জাহিদকে সদস্য এবং পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো আব্দুর রউফকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে কমিটি রেজিস্ট্রার দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। কিন্তু দেড় মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেননি। ফলে প্রকৃত ঘটনা এখনো উদঘাটিত হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সংবাদ প্রকাশের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বেশ কয়েকবার বিষয়টি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বিষয়ে তারা তদন্ত করছেন। তদন্তে সত্যতা প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির ডিনস কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো: আনিছুর রহমান জানান, ‘আমরা তদন্ত শেষ করেছি তবে এখনও জমা দেইনি, রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর তা আগামী রিজেন্ট বোর্ডে তোলা হবে। আর তদন্তের ফলাফল রিজেন্ট বোর্ডে উত্থাপনের পূর্বে অন্য কাউকে জানানোর সুযোগ নেই’।

জানা যায়, যবিপ্রবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুর রশীদ ডিপ্লোমা ইন কমার্স (এইচএসসি সমমান), বি.কম. এবং এম.কম. পাশ। তবে ২০১০ সালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি গ্রহণের সময় ওই তিনটি সনদের পাশাপাশি তিনি অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে এলএলবির একটি সনদটি জমা দেন। তাঁর দাখিলকৃত এলএলবি সনদটির পাশের সাল দেখানো হয় ১৯৯২। যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গত বছরের ১২ অক্টোবর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুর রশীদসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১৭টি সনদ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। তারই প্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বাবুল ইসলাম গত ২২ অক্টোবর যবিপ্রবির রেজিস্ট্রারের কাছে এক চিঠির মাধ্যমে জানান, ‘অফিস রেকর্ড অনুযায়ী মো: আব্দুর রশীদের সনদপত্রে নামের বানানে গরমিল থাকায় এবং মোঃ নজরুল ইসলামের সনদপত্র ইস্যুর তারিখ ভিন্ন হওয়ায় তা যাচাই করা গেল না। জনাব মোঃ আব্দুর রশিদের (এলএলবি/জুলাই১৯৯২) সনদপত্রে ‘ফলাফল’ টেম্পারিং করা। উক্ত সনদপত্রটি জাল বা ভুয়া।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো: আব্দুর রশিদ প্রকাশিত সংবাদকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত ও মর্যাদাহানিকর উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপি দেন। তিনি জানান, একটি বিশেষ মহল গণমাধ্যমকে ভুল বুঝিয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা করেছে যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।