রাজশাহী বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনাগারে `পপি’ চাষ নিষিদ্ধ

রাজশাহীর একটি সরকারি অফিসে ব্যাপকহারে নিষিদ্ধ আফিম তৈরীর কাঁচামাল ‘পপি ফুল’ চাষ চাষ হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের গাছ হওয়ায় এ গাছের চাষ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কিন্তু সৌন্দর্য্য বাড়ানোর নামে রাজশাহীর বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনাগারের বাগানে পপি গাছের চাষ হচ্ছে। সেখান থেকে অন্যস্থানে এসব গাছ সরবরাহেরও তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গবেষনাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, পপি চাষের বিষয়টি তাদের নজরেই নেই। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আধিদফতর বলছে, এগুলো কোনখানেই চাষ বা লাগানো যাবে না। খোঁজ পেলে তারা এগুলো ধ্বংস করে দিবেন।

রাজশাহী বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনাগারে প্রধান গেট দিয়ে ঢুকেই মূল ফুলের বাগানেই রয়েছে বেশ কিছু পপি গাছ। অন্য গাছের পাশেই রয়েছে পপি গাছও।

আনেকগুলো দেখে মনে হচ্ছে কৌশলে গাছের ভেতরে ঢেকে রাখা হয়েছে। তবে কোন কোনটি আবার প্রকাশ্যই রাখা হয়েছে। মূল বাগানের পাশেই রয়েছে আরও একটি বাগান, সেখানেও রয়েছে পপি গাছ। তবে এসব পপি গাছের শুধুমাত্র একটিতে ফুল এসেছে বাকিগুলোতে এখনো ফুল আসেনি। যে ফুলটি ফুটেছে সেটি ইন্ডিয়ান হলুদ পপি ফুল। এছাড়াও গবেষণাগারের ভেতরে আরও একাধিক বাগান রয়েছে । সেসব বাগানেও দেখা গেছে বেশ কিছু পপি গাছ। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই থেকে ৩’শটি পপি গাছ রয়েছে এখানকার বাগানে।
আরও পড়ুন: অপরিকল্পিত শিল্পায়ন বন্ধসহ প্রধানমন্ত্রীর ১১ অনুশাসন

বাগানের মালি পূর্ণ রায় বলেন, আমাদের এখানে আগে থেকেই এসব ফুল লাগানো হতো। তার বীজ থেকেই এসব গাছ হচ্ছে। আমাদের এখানে প্রায় সব প্রজাতির পপি ফুলই রয়েছে। এবছরও অনেকগুলো গাছ নতুন করে লাগানো হয়েছে। প্রায় ৩’শটির মত গাছ আছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এসব গাছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই ফুল আসবে। সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই এই ফুল গাছ লাগানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গবেষণাগারের এক কর্মকর্তা জানান, এখানে এসব চাষ হয় অনেক আগে থেকেই। এর আগেও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে। কিন্তু আবারো এখানে এসব গাছ লাগানো হয়েছে। এদিকে, এখান থেকে পপি গাছ গোপনে অন্যত্র সরবরাহও দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এগুলো চাষ করে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করার তথ্যও জানান তিনি।

এবিষয়ে রাজশাহী বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনাগারের পরিচালক ড. ইব্রাহিম বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। এবিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানাতে হবে। তবে এমন হলে এগুলো র্নিমূল করা হবে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক লুৎফর রহমান জানান, পপি দুই ধরণের হয়ে থাকে। একটি রস সংগ্রহ করা যায় আর একটিতে যায় না। এ দু’ধরনের গাছের চাষই নিষিদ্ধ। সৌন্দর্য্য বর্ধন বা চাষ কোনটিই করা বৈধ নয়। রাজশাহী বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনাগারের বিষয়ে তিনি বলেন, এর আগেও সেখানে পপির চাষ হয়েছে। ২০১৮ সালেও সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ধ্বংস করা হয়েছিলো। তবে এরপর আবারও সেখানে যে চাষ হয়েছে সেটি জানা নেই। তবে, এমন হলে আবারও সেগুলো নির্মূল করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

দেশদর্পণ/এমআরআর/এসজে