শতভাগ স্যানিটেশন অর্জনে একযোগে কাজ করতে হবে নাগরিকদের

নিরাপদ স্যানিটেশন সবার জন্য নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শতভাগ স্যানিটেশনের লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় পর্যায়ে গঠিত ‘স্যানিটেশন টাস্কফোর্স’ এখন গ্রাম পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে। বর্তমানে উপমহাদেশের মধ্যে স্যানিটেশনের দিক থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভাল অবস্থানে।

দেশে শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ এখন নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবহার করছেন। বাকি এক ভাগকেও এ বছরের মধ্যে স্যানিটেশনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দেশে উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের হার প্রায় শূন্যে নেমে আসলেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-২০৩০’র সূচক ‘সেফলি ম্যানেজড স্যানিটেশনে’ আমরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি।দেশের জনগোষ্ঠীকে সেফলি ম্যানেজড স্যানিটেশনের আওতায় আনতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থা ও উদ্যোক্তাসহ সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বেনাপোল পৌরসভায় কনফারেন্স হলরুমে জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার যশোর জেলার উপ-পরিচালক মোঃ নুরু-ই আলম এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন:
ভূমিধসে নিহত ৩৭ জন
ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন সাকিব

এবারের স্যানিটেশন মাস পালনের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘সকলের জন্য উন্নত স্যানিটেশন, নিশ্চিত হোক সুস্থ জীবন’। ‘জাতীয় স্যানিটেশন মাস অক্টোবর-২০১৯’র উদ্বোধন করে নুরু -ই-আলম বলেন, স্যানিটেশন উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া।

শুধু অক্টোবর মাসেই নয়, সারাবছরব্যাপী ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে দেশের জনগণের মধ্যে স্যানিটেশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা, স্বাস্থ্যসম্মত ও উন্নত স্যানিটেশনে সামাজিক আন্দোলনকে কাক্সিক্ষত সাফল্যের দিকে এগিয়ে নেবে। মন্ত্রী স্যানিটেশন সংক্রান্ত বিষয়াবলি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল পৌরসভার সচিব মোঃ রফিকুল ইসলাম, বেনাপোল পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহাবুদ্দিন মন্টু ,গাজীপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলহাজ্ব মিজানুর রহমান।

সমাপনি বক্তব্যে সভাপতি বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, দেশের প্রধানতম উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হলো পানি ও স্যানিটেশন সংক্রান্ত রোগ সংক্রমণের হার কমিয়ে এনে স্বাস্থ্যসম্মত পানি ও স্যানিটেশন সুবিধাদির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। এজন্য দেশের জনগণকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিকভাবে অবহিত করতে হবে।

এক্ষেত্রে, ‘জাতীয় স্যানিটেশন মাস’ উদযাপন বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জনগণই পারে দেশের উন্নয়নে শরিক হতে। তাই আমাদের সকলের উচিত ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা পালন করা এবং অন্যকে তা পালনে উৎসাহিত করা।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় সফলতা দেখিয়েছে তা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশসমূহ দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করেছে। শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন অর্জনের মাধ্যমে আমাদের এ সফলতাকে টেকসই করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকার বদ্ধপরিকর। ২০০৩ সাল থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগ অক্টোবর মাসকে জাতীয় স্যানিটেশন মাস হিসেবে পালন করার কারণে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহারে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়েছে।

দেশব্যাপী স্যানিটেশন কার্যক্রমকে বেগবান করতে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে স্যানিটেশন টাস্কফোর্স গঠন করে দেয়া হয়েছে এবং টাস্কফোর্সসমূহ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামেও এখন কে কত ভাল ল্যাট্রিন তৈরি করতে পারে তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। অথচ পাশের দেশ ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপসহ উপমহাদেশের অনেক দেশই আমাদের মতো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। ইউনিসেফ বাংলাদেশকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীদের স্যানিটেশন এর অর্থ এবং উপকারিতা বর্ণনা করে বুঝিয়ে দেন। তিনি আরো বলেন, খাবার আগে ভালো করে হাত পরিস্কার করতে হবে এবং বাড়ীর চার পাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

এর আগে বেনাপোল পৌরসভা থেকে র‌্যালি বের হয়ে বেনাপোল-বাহাদুরপুর মোড় হয়ে আবারো পৌরসভায় গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছাত্র ছাত্রীদের স্যানিটেশন এর অর্থ এবং উপকারিতা বর্ণনা করে বুঝিয়ে দেন।

অক্টোবর ৩০, ২০১৯  at ১১:০১:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এএইচ/এআই