জিকে শামীমের ব্যবসায়ীক পার্টনার হাজার কোটি টাকার মালিক এমপি রতন !


টেন্ডার, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা জিকে শামীমের ব্যবসায়ীক পার্টনার ছিলেন গাড়ি, বাড়ি গার্মেন্টস ফ্যঠক্টরীসহ হাজার কোটি টাকার মালিক সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও মধ্যনগর) আসনের সরকার দলীয় বিতর্কিত সংসদ সদস্য মোয়াজ্জমে হোসেন রতন এমপি।


 

দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়ের করা এক অভিযোগে এমনকি দাবি করা হয়েছে।

নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান সোহেল নামে এক অভিযোগকারি গত ৩ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান বরাবর ওই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সরকার দলীয় এমপি রতন জাদুকাট নদী থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন করা নৌকা বা ট্রলার থেকে প্রতি টিপ ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা হারে টোল হিসাবে আদায় করেন। জাদুকাঁটা নদী কেন্দ্রিক ফাজিলপুর কোয়ারীকে বগলদাবায় রেখে নৌ-পথে ৫ থেকে ৬ স্থানে প্রতিদিন এভাবে নৌ-পথে চাঁদা হিসাবেকই প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এমপি রতনের লোকজন।

২০০৯ সাল থেকে এমপি রতন জামাত বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারি ও কথিত হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নামে পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ওই চাঁদার টাকা আদায় করিয়েছেন। চাঁদার টাকা নিজেরাই ভোগ না করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন বিভিন্ন উপরমহলে।

এক বস্তা চাল যাকে বাকী দিতে রাজি হতনা এলাকার লোকজন সেই রতন থেকে এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বনে যাবার পর হাতে যেন ধরা দেয় আলাদীনের চেরাগ। বাড়ি বিলাস জেঁকে ধরে এমপি রতনকে। সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনস’র বিপরীতে প্রায় ৭ কোটি টাকা দিয়ে এক প্রবাসীর তৈরী করা সুরম্য প্রাসাদ কেনেন চাঁদাবকাজির টাকায়।

ধর্মপাশা উপজেলা তার নিজ গ্রামে বিভিন্ন অবৈধ আয়ের স্বাখ্ষি হিসাবেই প্রথমেই গড়ে বিলাশ বহুল আরো একটি প্রাসাদ । যে বাড়িটির বর্তমান মুল্য ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। নিজ উপজেলা ধর্মপাশার বিভিন্ন এলাকায় সাতটি আলিশান বাড়ি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা জেলা শহরে ১টি বাড়ির ও মেডিক্যাল কলেজের জন্য কয়েক কোটির টাকার জায়গা ক্রয়, মোহনগঞ্জ পৌরসভা ২টি, রাজধানী ঢাকার আশুলিয়া কয়েকটি গামেন্টর্স’র মালিক এখন এমপি রতন।

আরও পড়ুন:
ঝিকরগাছা সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের সহকারীকে আটক করেছে দুদক
শুরু অনলাইন শপিং উৎসব ১০-১০

রাজধানীর গুলশান এলাকায় রয়েছে এমপি রতনের আলীশান কয়েকটি ফ্ল্যাট। অবৈধ আয়ের টাকা জায়েজ করতে বিপুল পরিমাণ টাকায় কিনেছেন নামী দামি ব্রান্ড্রের কমপক্ষে ৫টি গাড়ি।

এমপি রতন কমিশন পেয়ে রাজধানীর আলোচিত ঠিকাদার ইলিয়াসকে সব ধরণের ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দিয়েছেন নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন উপজেলা ও উপজেলার বাহিরের এলাকায়।

ঠিকাদার ইলিয়াস যুবলীগের বহুল আলোচিত ও আইনশৃংখরা বাহিনীর হাতে আটক হওয়া জিকে শামীমের অন্যতম সহযোগি। ইলিয়াসের মাধ্যমে সখ্যতা থেকে ব্যবসায়ীক পার্টনার হয়ে যান জিকে শামীমের সাথে এমপিপ রতন। এরপর অবৈধ আয়ের কালো টাকা জায়েজ করতে এমপি রতন বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে।

জিকে শামীমের অফিসের গুলশান নিকেতন’র পাশে এমপি রতনের ব্যাক্তিগত ও ব্যবসায়ীক অফিস রয়েছে। এমপি রতন আর জিকে শামীম এক সময় ঘনিষ্ট বন্ধু হিসাবে আর্বিভুত হন গুলশান নিকেতন এলাকায়।

এমপি হবার পুর্বে পৈতৃক বা নিজের কোন দৃশমান সম্পদ না থাকলেও প্রথম দফায় আওয়ামীলীগ ও নৌকার জোয়ারে এক অচেনা অজানা রতন থেকে এমপি রতন হবার পর জলমহাল , হাটবাজার ইজারার নামে রুপাট, নিয়োগ বাণিজ্য ও নৌ-পথে চাঁদাবাজির টাকায় গত তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকায় রতন এখন গাড়ি, বাড়ি, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী হাওর এলাকার জমা জমিসহ কমপক্ষে হাজার কোটি টাকার মালিক।

অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতি ও সন্তানের বরপুত্রসাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া তাহিরপুরের ট্যাকেরঘাট সফরকালে বড়ছড়া কয়লা আমানি কারক সমিতির নামে তৎকালীন সময়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক হাজি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার।

ওয়ান ইলেভেনে কৌশলে নিজের আত্বরক্ষা করে সেই আলকাছ খন্দকার আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাহিরপুর কয়লা আমানি কারক গ্রুপের সভাপতি হতে এমপি রতনকে কয়েক লাখ টাকা উপটোকন দিয়ে রাতারাতি দল বদল করে নব্য আওয়ামী লীগার বনে যান।

এরপর গ্রুপের নির্বাচনে ভোটে না জিতলেও ফের রতনকে অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে নির্বচনে জাল জালিয়াতির ভোটের হিসাবে আলকাছ খন্দকার পুরো তিন মেয়াদে গ্রুপের সভাপতি রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে বাগিয়ে নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ ।

বিনিময়ে আলকাছ খন্দকার কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সচিব রাজেশ, বদর উদ্দিনকে ব্যবহার করে বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী এ তিন স্থল শুল্ক ষ্টেশনে বিভিন্ন আমদানিকারকগণ বাধ্য হয়ে কয়লার এলসির বিপরীতে গোপনে এমপির রতন ও তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের নামে গোপন অনুদান (চাঁদা) হিসাবে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা, প্রতিশত মেট্রিকটন চুনাপাথর এলসির বিপরীতে এক থেকে দেড় হাজার টাকা হাওে চাঁদা দিয়েছেন। যে আয়ে হাজি আলকাছ এখন স্বঘোষিত দানবীর ও হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলার শীর্ষ দশ হুন্ডি ব্যবসায়ীর একজন। আর এমপি রতন তারই বদৌলতে পেয়েছিলেন গাড়ি বাড়ি ফ্যাক্টরীর করার মত সেই আলাদীনের চেরাগ।

তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর নির্বাচনী এলাকার সরকারি রাজস্ব আয়ের খাত গুলোকে নিজের বলয়ের লোকজন দ্বারা লুটে পুটে প্রতি বছর সরকারের কম পক্ষে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের খাতকে ধ্বংস করেছেন।

সুনামগঞ্জ -১ আসনের সাংসদ এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বিদেশে থাকায় অভিযাগ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত অবধি তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অক্টোবর ১১, ২০১৯ at ০০:৫৯:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক//এএএম