আমি নিশ্চিত যে এক সময় দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হবে। জাপান সরকার ও জাইকা এই সরকারের নির্মাণ প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা বিবেচনার অবস্থানে থাকবে। বর্তমানে জাপান সরকারের অবস্থান হচ্ছে ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে আমাদের সহযোগিতা প্রস্তাবের সুযোগ নেব।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকো বলেছেন, তার দেশ দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের চলমান প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিতে আগ্রহী। তিনি এমন এক সময় এ কথা বললেন, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি এবং রাজনৈতিক বিচক্ষণতার কারণে প্রথম পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে তার বাসায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে এটি (পদ্মা সেতু) অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও সফল হবে। সুতরাং, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হবে একটি বাস্তবতা।’ খবর বাসসের।
ইতো বলেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশে মানসম্মত অবকাঠামো নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা থাকলে টোকিও ভাল প্রযুক্তি দিতে প্রস্তুত রয়েছে। জাপান এ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে ছোট ও বড় ১৩৪টি সেতু নির্মাণে সহযোগিতা করেছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে তার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি চমৎকার মাইলফলক। আর এটি বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে নির্মাণ শেষ হয়েছে।’
তিনি পদ্মা সেতুকে দেশের স্বপ্ন ও গর্ব হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশ এর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য কি করতে পারে এটি তার বড় প্রমাণ। তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধিও আকাক্সক্ষা পূরণ করবে। এ মাসে পদ্মা সেতু এবং এ বছরের শেষ নাগাদ মেট্রো রেলসহ বিভিন্ন মান সম্মত অবকাঠামো উদ্বোধনের নজির সৃষ্টির মাধ্যমে ২০২২ সাল বাংলাদেশের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের কথা স্মরণ করে নাওকি বলেন, তিনি পদ্মা সেতু ও রূপসা সেতু দুটি সেতুতে সহযোগিতার জন্য জাপানের কাছে অনুরোধ করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি পদ্মা সেতুর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে এবং রূপসা সেতু নির্মাণ করেছে। এটি সন্তোষজনক বিষয় যে, জাপান একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় এই (পদ্মা সেতু) প্রকল্পের অংশ হতে পেরেছিল। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, জাইকা পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের অংশ হতে পারেনি যদিও এটা জাপান সরকারের আগ্রহ ছিল।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন, এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ নিজে থেকে কতটা করতে সক্ষম।
তিনি বলেন, জাপান রূপকল্প-২০৪১ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় জাপান পাশে থাকবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান একটি শিল্প করিডোর নির্মাণের জন্য বে অফ বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিআইজি-বি) উদ্যোগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে বেশ কয়েক’টি মেগা প্রকল্পের উপর দৃষ্টি দিচ্ছে। তবে, রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি নিশ্চিত যে, জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিআইজি-বি এলাকার বাইরের সম্ভাবনা খোঁজার আরও সুযোগ থাকবে কারণ, এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে।
জুন ২২,২০২২ at ১৬:৪৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভক/জআ