পাঁচবিবিতে যৌতুকের দাবীতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নির্যাতন

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে যৌতুকে দাবীতে স্বামী কর্তৃক ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রুমানা খাতুন (২০) কে অমানুষিক নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ঐ নির্যাতিত স্ত্রী জয়পুরহাট জেলা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৬৫/২০২১ না. শি. পি.। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের ধরঞ্জী গ্রামে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বছর দেড়েক আগে উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের মৃত জহির উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে জনি বাবুর সাথে একই উপজেলার রাধাবাড়ী গ্রামের সেফাজার রহমানের মেয়ে রুমানা খাতুন সহিত ৭৫ হাজার দেন মোহরানায় রেজি. কাবিন মূলে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর রুমানার দরিদ্র পিতা মেয়ে জামাইয়ের সুখের জন্য ২লক্ষ টাকা উপহার হিসাবে দেয়। বিবাহের পর থেকে বেশ কয়েক মাস তাদের সংসার ভালই চলছিল। এরপর জনির আগের স্ত্রীর কু-প্ররোচনায় জনি ও তার মা মাহফুজা খাতুন পুণরায় ২লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য রুমানা খাতুনের নিকট দাবী করে।

কিন্তুু রুমানার দরিদ্র পিতার পক্ষে দাবীকৃত আরো ২লক্ষ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মা ছেলে মিলে রুমানার উপর বিভিন্ন ভাবে শারিরিক ও মানুষিক নির্যাতন করতে শুরু করে। এরমধ্যে রুমানা খাতুনের গর্ভে সন্তান আসায় সেই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামী নির্যাতনের পরেও ঘর সংসার করতে থাকে।

আরো পড়ুন :
কোটচাঁদপুরে জানাযা পড়াকে কেন্দ্র করে ইমামকে মারধর, এলাকায় উত্তেজনা
ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক, মহাসচিব দ্বীপ

এমতবস্থায় জনি ও তার মা মাহফুজা বেগম আবারও যৌতুকের টাকার দাবীতে রুমানাকে গালিগালাজ ও মানুষিক চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে জনি ও তার মা রুমানাকে বিবস্ত্র করে বাঁশের সাথে বেধে এ্যালোপাথারী কিল ঘুষি ও মারপিট করতে থাকে।

এসময় আসপাশের লোকজন এসে রুমানাকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে মহীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। বর্তমানে রুমানা খাতুন ৬ মাসের অন্তঃসত্তা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জনি অত্র এলাকার একজন কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারী ও ব্যবসায়ী এবং মাদকাসক্ত। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে। সে ইতিপূর্বে তার প্রথম স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালিয়েছে। জনির অত্যাচারের ফলে তার প্রথম স্ত্রী স্বামীর সংসার ছেড়েছেন।

বর্তমানে রুমানা বাবার বাড়ীতে অবস্থান করছেন এবং যৌতুকের দাবীকৃত ২লক্ষ টাকা নিয়ে না আসলে তাকে নিয়ে সংসার করবে না বলে জানায়।

এবিষয়ে জনি বাবুর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই স্ত্রীকে নিয়ে আমি আর সংসার করবো না। দেন মোহরের টাকা দিয়ে তাকে তালাক দিবো। আর যদি আমার সাথে সংসার করতে চাই তাহলে আমি যা বলব তা শুনতে হবে।

অক্টোবর ২৪.২০২১ at ১৬:১৫:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোমাপারা/রারি