ক্ষেতলালে রাস্তা না দেওয়ায় কৃষকের জমির ধান কীটনাশক ছিটিয়ে পুড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার দক্ষিণ হাটশহর গ্রামের জমির মালিকদের নিকট পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া গ্রামের সংযোগ সড়ক নির্মনের জন্য জমি চেয়ে ব্যর্থ হয়ে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তা পরিমান জমির ফসল আগাছানাশক ঔষধ ছিটিয়ে নষ্ট করছে দুর্বৃত্তরা।

উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ হাটশহর ও পার্শ্ববরতী শেখপাড়া গ্রামে তিন বছর ধরে এমন ঘটনা ঘটে আসছে এবারো বৃহস্পতিবার রাতে উক্ত ঘটনাটি আবার ঘটেছে।

ওই এলাকার সুধীজন’রা জানিয়েছেন, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে রাস্তা দেওয়া নেওয়া ও জমির ফসল নষ্ট করা নিয়ে তিন বছর যাবৎ এ বিবাদ চলছে। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন মহল ও দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোন সমাধান হয়নি। এনিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে খুন জখম ও হতাহতের ঘটনা।

দক্ষিণ হাটশহর গ্রামের জমির মালিক মোসলেম ও মোজাহার দুই ভাই জানায়, আমাদের গ্রাম থেকে পার্শ্ববরর্তী শেখপাড়া গ্রামের দুরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক হাইদার, রাজ্জাক সরদারের ছেলে শাহাজুল ইসলাম, মছর ছেলে আলতাফ হোসেন, দুখু মিয়া, রাজ্জাক ফকিরের ছেলে তছলিম সহ আরও অনেকে তিন বছর আগে আমি সহ আরও কয়েকজন জামির মালিকের নিকট এসে বলেছিলেন আমাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য আপনাদের জমির পাশদিয়ে রাস্তা বেধে নিতে চাই। এক বছর আগে রাতে গোপনে কিছুটা রাস্তা বেধে ছিলাম।

পরে অন্যান্য জমির মালিকরা জানতে পেয়ে সে টুকু ভেঙ্গ ফেলেছে। ওই এলাকা দিয়ে আমাদের দুই ভাইয়ের ফসলি জমি রয়েছে প্রায় ৮ থেকে ১০ বিঘা। গ্রামের অন্যান্য ব্যক্তিদের মিলিয়ে আরও পঞ্চাশ বিঘার মত জমি পরেছে ওই দিক দিয়ে। ওই গ্রামের রাস্তা থাকা স্বত্বেও নতুন করে রাস্তা তৈরী করতে দিলে আমাদের জমির ক্ষতি হবে এই ভেবে তাদেরকে নতুন রাস্তা তৈরী করতে নিষেধ করেছিলাম।

এর পর থেকে যে দিকদিয়ে তারা রাস্তা চেয়েছিল, সেই দিক দিয়ে প্রতিবছর কে বা কাহারা রাতের অন্ধকারে ক্ষতিকারক আগাছানাশক স্প্রে করে ওই এলাকার আলুর মৌসুমে আলু ও ধানের মৌসুমে ধান এবং অন্যন্য ফসল নষ্ট করছে তারা। এ বিষয়ে গত বছর ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা পরিষদের কৃষি অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছিলাম কোন ব্যবস্থা হয়নি।

ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেছে, শেখপাড়া গ্রামের পূর্বদিকে মেইন সড়কে ওঠার জন্য ইউনিয়ন বোর্ডের ইট সলিং পাকা সংযোগ সড়ক থাকা স্বত্ত্বেও তারা আবারও আমাদের এই জমির উপর দিয়ে নতুনভাবে সড়ক চায়। পরে আমরা না দিলে পরিকল্পিত ভাবে তিন বছর যাবৎ আমাদের লাগানো এই সমস্ত ফসলে বিষ ছিটিয়ে ক্ষতি করছে।

আরো পড়ুন :
নওগাঁয় খুব শীঘ্রই চালু হচ্ছে উত্তরবঙ্গে পুলিশের সবচেয়ে বড় শপিং মল
আত্রাইয়ে হেলথ ক্যাম্পের শুভ উদ্বোধন

আরও জানাগেছ, ওই এলাকার অধিকাংশ জমির মালিক’রা ওই সমস্ত জমি নিজে চাষ করে না। তারা অন্য দরিদ্র কৃষকদের নিকট মোটাংকের টাকা নিয়ে সনপত্তন রাখে। এতে বছরের পর বছর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ কৃষক।

এ বিষয়ে ওই শেখপাড়া গ্রামের রাজ্জাক সরদারের ছেলে শাহাজুল ইসলাম, মছর ছিলে আলতাফ হোসেন, দুখু মিয়া, রাজ্জাক ফকিরের ছেলে তছলিম সহ আরও অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, আমাদের গ্রামের ছেলে মেয়েরা দক্ষিণ হাটশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখা পড়া করে। বর্ষা মৌসুমে জমির আইল দিয়ে ছেলে মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতে অনেক সমস্যা হয়। অনেক সময় ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে চায় না।

এমন সুবিধার জন্য ওই স্কুল পর্যন্ত ছোট একটি সংযোগ সড়ক চেয়ছিলাম। আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে তাদের আশ্বাসে আমরা কিছুদুর পর্যন্ত রাস্তা বেধে ছিলাম। সেটুকুও তারা কেটে ফেলেছে। এরপর ওই রাস্তা বিষয়ে আমরা আর কোন কথা বলিনি এবং তাদের জমির ফসলেরও কোন ক্ষতি করিনি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু রাশেদ আলমগীর হোসেন বলেন, দক্ষিণ হাটশহর গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি আমার নিকট এসে অভিযোগ করেছিলেন। ওই দিক দিয়ে শেখপাড়া গ্রামের সংযোগ সড়ক নির্মান করতে তারা কোন জমি দিবে না। তবে তাদের ফসল কে বা কারা নষ্ট করেছে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি।

অক্টোবর ২০.২০২১ at ১৮:০৪:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/মোশাইশা/রারি