পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত তালতলীর রেডক্রিসেন্টের সদস্য তুহিন

বরগুনার তালতলীতে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচিতে পুলিশ ও যুব রেডক্রিসেন্টের কয়েকজন সদস্য দায়িত্ব পালন করতে যায়। দায়িত্ব পালনের এক পযার্য় যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য সেচ্ছাসেবক ইমরানুল হক তুহিনকে পুলিশ সদস্য আবু সাইদ মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রবিবার দুপুরের দিকে তালতলী হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তালতলী উপজলার সকল সেচ্ছাসেবী সংগঠন নিন্দা জানিয়ে ঐ পুলিশ সদস্যের বিচার দাবী করেন।

স্থানীয় জানা যায়, তালতলী ২০ শয্যা হাসপাতালে চলমান করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। করোনার টিকা নিতে আসেন এলাকার রেজিষ্ট্রেশনকৃত শতশত মানুষ । তবে এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সামাজিক দুরত্ব বজায় ও সিরিয়াল ঠিক রাখায় জন্য স্থানীয় যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা কাজ করছে আসেন। এদের সহযোগীতার জন্য পুলিশ সদস্যরাও আসেন।

এরা যৌথ ভাবে দায়িত্ব পালনের এক পযার্য় টিকা নিতে আসা এক ব্যক্তি সিরিয়াল ঠিক রেখে টিকা রেজিস্ট্রেশন ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি করতে দোকানে যায়। দোকান থেকে সেই ব্যক্তি ফটোকপি নিয়ে ফের হাসপাতালে প্রবেশ করেন। এতে বাধা দেন পুলিশ সদস্য আবু সাইদ এবিষয়ে যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য ইমরানুল হক তুহিন বলেন এই লোক সিরিয়াল ঠিক রেখে বাহিরে গেছিলো ফটোকপি করতে।

তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেন। সাথে সাথে পুলিশ সদস্য আবু সাইদ চড়াও হয়ে তুহিনকে বলেন তুই বের হয়ে যা হাসপাতাল থেকে। এনিয়ে কথার কাটাকাটির এক পযার্য় পুলিশ সদস্য ইমরানুল হক তুহিনকে ৬ থেকে ৭ টি লাথি দিয়ে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে ফেলে বেধরক মারধর করেন। এতে ঐ যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য’র হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। মুহূর্তে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

পরে তুহিনকে উদ্ধার করে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য ইমরানুল হক তুহিনের মা হাসপাতালে আসেন টিকা দিতে। তার চোখের সামনেই হয় ছেলেকে মারধরের ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে এ হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে তার সহকমর্ীরা বিভিন্ন পোস্ট দেয় যা সাথে সাথে ভাইরাল হয়।

ইমরানুল হক তুহিন উপজেলা যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্য ছাড়াও তালতলী বিডিক্লিনের উপজেলা সমন্বয়ক ও সূর্যশিখা ব্লার্ড ডোনার্স ক্লাবের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

সূর্য শিখা সোশ্যাল অর্গানাইজেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের এমন হামলা খুবই দুঃখজনক। হামলাকারী পুলিশ সদস্যর বিচার দাবি করছি।

উপজেলা যুব রেডক্রিসেন্টের দলনেতা জিয়া উদ্দিন মান্না বলেন, আমাদের সহকমর্ীর ওপর এমন হামলার প্রতিবাদ জানাই। পুলিশের হাতে এমন হামলা হলে আমারা কিভাবে সেচ্ছায় সেবা দিবো। এই হামলার সাথে জড়িত সেই পুলিশ সদস্য বিচার দাবি করছি।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশ সদস্য যদি এমন কোনো কাজ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনা পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুলাই,১৮.২০২১ at ১৮:২২:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এমটি/এসআর