নওগাঁয় বিশেষ লকডাউনের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়লো

নওগাঁ জেলার নওগাঁ পৌরসভা এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় কিছু কিছু শর্ত শিথিল করে চলমান বিশেষ লক ডাউনের মেয়াদ আরও সাত দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলমান এই লকডাউন আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

তবে ৭দিনের জন্য বিধিনিষেধ জারি করেছে জেলা প্রশাসন। গত ০৮/০৬/২১ তারিখের অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার স্থানীয় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এই ঘোষনা এ সিদ্ধান্ত প্রদান করেন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন-অর-রশীদ।

আগামী ১৬ জুন তারিখ মধ্যরাত পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধিনিষেধ গুলোর মধ্যে রয়েছে, নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় শর্ত শিথিল করে এখন জেলা সদর থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে এবং মাস্ক পরিধান সহ স্বাস্থ্য বিধি মেনে গণ পরিবহন যেমন বাস, মাইক্রো, অটো, সিএনজি, মোটর সাইকেল চলাচল করতে পারবে।

জেলার সব ধরনের দোকানপাট ও শপিংমল বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত খোলা থাকবে। জেলার নিয়ামতপুর উপজেলা এবং রাজশাহী ও চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার সাথে সকল পরিবহণ বন্ধ থাকবে। হোটেল রেস্তোঁরাগুলো শুধুমাত্র পার্সেল আকারে বা অনলাইনে অর্ডার গ্রহণপূর্বক বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।

আগের ,মতই চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও আর্ন্তাতিক সীমান্ত সংলগ্ন জেলার সকল হাট বাজার সমূহ বন্ধ থাকবে। জেলার সকল পর্যটন স্থল, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র সমূহ বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক সহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিবাহ অনুষ্ঠান, জন্মদিন ও পিকনিক পার্টি ইত্যাদি বন্ধ থাকবে।

জুম্মার নামাজ সহ প্রতি ওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লী অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ সময় পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মোঃ আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম, সিভিল সার্জন ডাঃ এ বি এম আবু হানিফ, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার উত্তম কুমার রায়, এডিসি মোঃ ইব্রাহীম সহ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

নওগাঁ জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ২ দিন আক্রান্তের হার ৭ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকলেও গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় আক্রান্তের হার ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৫২ জন। এ সময় মোট ২৯২ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৯২ জন-এ। জেলায় উপজেলা ভিত্তিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা হচ্ছে মহাদেবপুর উপজেলায় ১১ জন, সদর উপজেলায় ১০ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৭ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৫ জন, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় ৪ জন করে, মান্দা, পতœীতলা ও সাপাহার উপজেলায় ৩ জন করে এবং থামইরহাট ও পোরশা উপজেলায় ১ জন করে। এ সময় সুস্থ্য জেলয় মোট সুস্থ্য হয়েছেন ৫ জন এবং মোট সুস্থ্য হয়েছেন ২০৯৩ জন। বর্তমানে করোনা ভাইরাসে জেলায় আক্রান্ত রয়েছেন ৪৯৯ জন।

সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে হোম কোয়ারেনটাইনে নেয়া হয়েছে ১২৫ ব্যক্তিকে। তাঁদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৯ জন, রানীনগর উপজেলায় ৬ জন, আত্রাই উপজেলায় ৩ জন, মহাদেবপুর উপজেলায় ২৮ জন, মান্দা উপজেলায় ৩ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৫ জন, ধামইরহাট উপজেলায় ১ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ৫ জন, সাপাহার উপজেলায় ৬ জন এবং পোরশা উপজেলায় ৮ জন।

আরো পড়ুন:
জগন্নাথপুরে আলুখাল নদীতে স্থানীয়দের উদ্যোগে বাঁশের সেতু

জেলায় সর্বমোট কোয়ারেনটাইনে নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা ২৩ হাজার ২৫ জন। এই ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেনটাইন থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৪৮ জনকে। এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ২০ হাজার ৭শ ২৪ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেনটাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩শ ৭২ জন। জেলায় আইসোলেশনে আছেন ২২ জন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটে নি। এ পর্যন্ত জেলায় মোট মৃত্যুবরন করেছেন ৪৮ জন।