সোনারগাঁয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নামফলক ভাংচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের উন্নয়নমুলক কাজের নামফলকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নাম থাকায় সেই নামফলক ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকাকে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। সোনারগাঁ পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে এ কর্মসুচি পালন করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

এসময় সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত বলেন, বর্তমানে আওয়ামীলীগের সুবর্ণ ও স্বর্ণযুগ চলছে অথচ দল ক্ষমতায় থেকেও আমাদের মানববন্ধনসহ নানা কর্মসুচি পালন করতে হচ্ছে। এটা সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের জন্য কতটা দুঃখের তা শুধু আমি জানি। বিএনপি ও জামায়াতের লোকদের জোর করে জাতীয় পার্টিতে নিয়ে মনে করছেন সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হয়ে গেছে এটা আপনার ভুল ধারণা। ২০০১ সালে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে জামায়েত বিএনপির দুর্নীতির মুল উৎপাটন করতে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিলো এবং সোনারগাঁয়ের মানুষ আমাকে এমপি বানিয়েছিলো। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ পালন করতে আমরা আপনাকে এ আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনাকে এমপি বানাতে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা যেভাবে কাজ করেছে আপনি তা ভুলে গেছেন। আপনি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছেন। আপনার উচিৎ ছিলো উন্নয়নমুলক সকল কর্মসুচির আগে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে পরামর্শ করে তা বাস্তবায়ন করা। আমি একটি কথা আপনাকে বলতে চাই, আপনার ক্ষমতা আর মাত্র ৩ বছর। এখন থেকে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের উপর কোন প্রকার নির্যাতন ও শেখ হাসিনার উন্নয়নে বাঁধা সৃষ্টি করবেন না। তা না হলে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা আর বসে থাকবেনা, তারা আপনাকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে। আপনি কথায় কথায় বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনার মাতৃতুল্য নেত্রী, অথচ স্থানীয় নির্বাচন আসলে আপনি নৌকার বিপক্ষে কাজ করেন। সামনে পৌরসভা নির্বাচন সেই নির্বাচনে আপনার রূপ প্রকাশ পাবে। নির্বাচন আসলেই আপনি বেপরোয়া হয়ে যান। পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আপনি আপনার সহধর্মিনীকে মেয়র বানাতে নৌকার বিপক্ষে গিয়ে নানা পাঁয়তারা করে আসছেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভাংচুরের প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরে এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিরুদ্ধে নোংরা ভাষা ব্যবহার করে শ্লোগান ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

আরও পড়ুন:
শিবগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ’র উদ্বোধন
ঝিকরগাছায় আট মাস ধরে যুবক নিখোঁজ
লালপুরে আগুনে পুড়ে প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু!

তিনি আরও জানান, ১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শণে যান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গেইটের সামনে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের উদ্বোধনী নামফলক দেখতে পেয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা তার কর্মীদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি এমপি আমার নাম নেই! জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম এখানে কিভাবে দেয়া হলো। তার নামফলক এখান থেকে এক ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে নেয়ার জন্য লিয়াকত হোসেন খোকা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সুলতান মিয়াকে নির্দেশ দেন। এমপির এ নির্দেশ পাওয়ার ২০ মিনিট পর তার অনুগামী ও জাতীয় পার্টির কর্মীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নামফলক ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, মোগরাপাড়া ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ বাবু, সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মজিবুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামাল নিলু, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম মাহফুজুর রহমান, উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কহিনূর ইসলাম রুমা, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক আরিফুর রহমান রবিন, উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শেখ এনামুল হক বিদ্যুৎ, উপজেলা প্রজন্মলীগের সভাপতি আরমান আহমেদ মেরাজ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি খোকন মোল্লা, উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মাহবুব-মিলন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নবী, যুবলীগের প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন, শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি রাসেল, পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মুজিবর রহমান, উপজেলা যুবলীগের সহ সম্পাদক শাহীন আলম স্বাধীন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর লায়ন মোশারফসহ আরো অনেকে।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে নামফলক ভাঙ্গার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আসবে বলে জানা গেছে।

১৯ নভেম্বর, ২০২০ at ১৮:৫০:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/কেএ/আরএইচ