কবে পাবে ভাতার কার্ড শ্রীমতি..?

লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের শ্রীমতি রানী স্বামী হারা হয়েছে ৩৫ বছর আগে। সম্বল বলতে মাথা গোজার যে ঠায় টুকু ছিলো তাও ৩০ বছর আগে দুই সন্তান বিক্রয় করে বিধবা মাকে ফেলে নিরুদ্দেশ হয়েছে। এখন স্বামী সন্তান ও মাথা গোজার শেষ সম্বল টুকু হারিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি আশ্রিতা হয়ে কোন এক ঘরের কনে পড়ে থাকেন আর মানুষের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলে শ্রীমতির পেট।

দেখার বলতে কেউ নেই তার। তবে আজও পায়নি সরকারী কোন ভাতার কার্ড। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে কানেও কম শুনে তবে ভোটার আইডি কার্ডে তার বয়স ভুল লিখা হয়েছে। ভিক্ষাবৃত্তি আর মানুষের বাড়িতে আশ্রিতা হয়ে কোনো হলে কেটে যাচ্ছিলো তার জীবন। মাস দেড়েক আগে পায়ে হেঁটে ভিক্ষা করতে যাচ্ছিলেন শ্রীমতি কিন্তু বিধিবাম হঠাৎ ওয়ালিয়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছাইলে একটি জুট ভর্তি থামানো ট্রাক থেকে একটি জুটের বস্থা তার উপরে পরে এতে তার ডান পায়ের হার ভেঙ্গে যায়। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় স্থানীয় ওয়ালিয়া সিপাই পাড়ার একটি কবিরাজের কাছে ভাঙ্গা পায়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন তিনি।

সোমবার (০৭ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,‘ ভাঙ্গ পা নিয়ে শুয়ে আছে শ্রীমতি। ব্যাথায় আত্মচিৎকার করছে, শরীর ফুলে গেছে। সরকারী কোন সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা শ্রীমতির কাছে জানতে চাইলে তিনি ছোট ছোট করে বলছিলো,‘তিনি এখন পর্যন্ত কোন সরকারী সহযোগিতা পাননি। করোনা কালেও তিনি সরকারী কোন সহযোগিতা পাননি। তাকে দেখার কেউ নেই। তার থাকার কোন জায়গা নেই মানুষের বাড়ি বাড়ি আশ্রিতা হয়ে থাকে।

এখন বয়সের কারনে ঠিক ভাবে হাটতেও পারেনা আর কানেও কম শুনেন তাই মানুষের বাড়ি বাড়ি আর আগের মতো ভিক্ষাও করতে পারে না। মেম্বার কে অনেক বলেও একটি বিধাব ভাতার কার্ড পাননি তিনি। তবে এই অসহায় ভূমিহিন স্বামী সন্তান হারা বিধাব এই মানুষটি কবে পাবেন একটি সরকারী বাড়ি একটি ভাতার কার্ড..?

এব্যাপারে ওয়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান,‘আগামি এক মাসের মধ্যে তাকে ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। লালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী জানান, ‘আমার জানা ছিলোনা এখন জানলাম খুব দ্রুত শ্রীমতির বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।’

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ২২:০২:০৮ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এআরটি/এনআফটি