অবৈধ ও নিষিদ্ধ সূতি জাল দিয়ে মাছ নিধন

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের বিভিন্ন খালের মুখের ৩টি স্লুইস গেইটে অবৈধ ও নিষিদ্ধ সূতির জাল দিয়ে চলছে মাছ নিধন। দীর্ঘদিন যাবত এই মাছ নিধন চললেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন ভুমিকা গ্রহণ না করায় হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবীরা। এছাড়াও উপজেলার ঐতিহ্যবাহি রক্তদহ খালের বিভিন্ন স্থানসহ অন্যান্য খালের উপর দীর্ঘদিন যাবত এই অবৈধ ও নিষিদ্ধ সূতি জাল দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে যে, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নটি হচ্ছে বিল ও খাল অধ্যূষিত এলাকা। বিল মুনছুর, বিল চৌরসহ কয়েকটি বড় বড় বিল এবং শ্রীমতখালী, কাটাধর ও বড়ধর নামের কয়েকটি খালও অবস্থিত এই ইউনিয়নে। এই সব বিল ও খালের পানি নিষ্কাশনের জন্য মিরাট রাস্তার ৩টি স্থানে স্থাপন করা হয়েছে স্লুইস গেইট। প্রতি বর্ষা মৌসুমেই এই ৩টি স্লুইস গেইটে অবৈধ ও নিষিদ্ধ সূতির জাল দিয়ে মাছ নিধন করে আসছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আর ক্ষতির মুখে পড়েছে বিলের আশেপাশে বসবাসরত কয়েকশত মৎস্যজীবীরা।

১নং স্লইস গেইটের ১টি সূতি জাল নিয়ন্ত্রন করছে আতাইকুলা গ্রামের মৃত-ছুবুল্লাহর ছেলে মওদুত, ২নং গেইটের ৩টি সূতি জাল নিয়ন্ত্রন করছে আতাইকুলা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে আতিকুল, মামুন, কুদ্দুস এবং ৩নং স্লুইস গেইটের ৩টি সূতি জাল নিয়ন্ত্রন করছে ধনপাড়া গ্রামের রুবেল, ফরিদ, ফজলুসহ অনেকেই। এছাড়াও এই সব ব্যক্তিদের পেছনে আওয়ামীলীগের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মানুষের ইন্ধন রয়েছে বলে জানা গেছে। এই সূতির জাল দিয়ে মাছ ধরার কারণে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা বিভিন্ন খালে মাছ পাচ্ছে না। এছাড়াও এই সূতির জাল এমন একটি জাল যে জাল দিয়ে ছোট-বড় কোন মাছই বের হতে পারে না। যার কারণে অনেক প্রজাতির মাছ আজ বিলীন হওয়ার পথে। স্থানীয়দের দাবী প্রভাবশালী গুটি কয়েক মানুষ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গেইটের সূতিজাল নিয়ন্ত্রন করে আসছে দীর্ঘদিন। এদের বিরুদ্ধে স্থায়ী ভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই সব অবৈধ কর্মকান্ড তারা চালিয়েই যাবে।

সূতি জাল নিয়ন্ত্রনকারী মামুনসহ অনেকেই জানান প্রতি বছরই আমরা এই জাল দিয়ে মাছ ধরে থাকি। আমরা গরীব মানুষ। কাজ-কর্ম নেই তাই এই জাল দিয়ে মাছ ধরি। এটা সবাই জানে। অনেকের মন যোগার করেই এই জাল ফেলতে হয়।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন খবর পেয়ে আমি একবার গিয়ে সূতি জাল তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তিতে তারা আবার জাল পেতেছে। বিষয়টি আমি নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি অনুমতি দিলেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর সকালে জাল তুলে দিয়ে আসলে বিকেলে আবার তারা জাল পানিতে নামিয়ে দেয়। তাই এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন আমি বিষয়টি জেনেছি। অতিদ্রুত সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১৪:৩৩:৪২ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/এসআই/এনআফটি