মেয়েকে বেঁধে রেখে মাকে গণধর্ষণ, থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা রেকর্ড !

বরগুনার তালতলীতে ৭ বছরের কন্যা সন্তানকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মাকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা নিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এলাকায়।

জানাগেছে, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার হাতেম আলী খলিফার মেয়ে এক সন্তানের জননী তার শ্বশুর এলাকা পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থেকে আসার সময় পাথরঘাটা খেয়া পাড় হয়ে তালতলীর শুভসন্ধ্যা ঘাটে ওঠেন। ওখান থেকে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাট যাওয়ার জন্য স্থানীয় জহিরুলের মটর সাইকেলে ওঠেন। জহিরুল মটরসাইকেলে ঐ নারীকে নিয়ে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জহিরুল তার চার বখাটে সহযোগী এমাদুল, নজরুল, সোহাগ, সাইদুলকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে উক্ত স্থানে নিয়ে আসে। সবাই মিলে ঐ নারীর সাথে থাকা কন্যাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মেরে ফেরার ভয় দেখিয়ে ঐ নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এতে ঐ নারী জ্ঞান হারালে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঐ নারীর জ্ঞান ফিরলে তার মেয়েকে সহ পার্শ্ববর্তী লোকজনের কাছে আশ্রয় চাইলে তারা অন্য মটর সাইকেল যোগে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাট পৌছে দেন।

গৃহবধূ জানিয়েছেন, সকাল ৮টার দিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে পাথরঘাটা পৌছায়। সেখান থেকে ট্রলার যোগে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভসন্ধ্যা তেতুলবাড়িয়া লঞ্চ ঘাটে ১০টা দিকে নামি। তারপর এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে নিশানবাড়ীয়া খেয়াঘাট যাওয়ার চুক্তি করলে আমাকে নিশানবাড়ীয়া খেয়াঘাট না নিয়ে জঙ্গলে দিকে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মটর সাইকেল চালক মোবাইলে ডেকে আরো চারজনকে আনে। তারপরে ওরা সবাই মিলে আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে খুনের ভয় দেখিয়ে আমাকে সকাল ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তারা আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায়। আমার জ্ঞান ফেরার পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় অন্য মটর সাইকেল যোগে নিশানবাড়িয়া এসে খেয়া পাড় হয়ে বাড়ীতে পৌছাই।

তিনি আরও বলেন, লোকলজ্জার ভয়ে আমি কোথাও অভিযোগ করিনি। কিন্তু বিষয়টি ব্যাপক ভাবে জানাজানি হওয়ায় আমি থানায় এসে বিচার চাইতে বাধ্য হই।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা জানান, মটর সাইকেল চালক জহিরুল ১০টার দিকে ঐ মহিলাকে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে এমাদুল, নজরুল, সোহাগ, সাইদুল ও জঙ্গলের দিকে যায়। বিকাল ৪টার দিকে ঐ মহিলা রাস্তায় এসে জনসম্মুখে উক্ত ঘটনা প্রকাশ করলে আমরা অন্য মটর সাইকেল যোগে নিশানবাড়িয়া খেয়াঘাটে পাঠিয়ে দেই।

এ ব্যাপারে তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী নিজেই থানায় এসেছেন। তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছ।