উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে ঘূষ-দূর্নীতির অভিযোগ

পটুয়াখালীর দুমকিতে উপজেলা ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী (অফিস সহায়ক) মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ ওঠেছে। মিউটেশন, নামজারী, খাসজমির বন্দোবস্তসহ ভ‚মি সংক্রান্ত কাজকর্ম সম্পন্ন করে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘূষ আদায় করে অঢেল ধনসম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। অবৈধ-ধনসম্পদ আর নগদ টাকার জোড়ে তিনি ধরাকে সড়াজ্ঞান করে বেড়াচ্ছেন। হয়রানীর শিকার একই উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের চরগরবদি গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন শরীফের ছেলে মো. গোলাম হোসেন শরীফ গতকাল রবিবার সকালে প্রেসক্লাব, দুমকির সভাকক্ষে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেছেন। অভিযুক্ত অফিস সহায়ক মনির হোসেন অবশ্য ঘূষ-দূর্ণীতির অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য বলে দাবি করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, উপজেলা ভ‚মি অফিসে কর্মরত অফিস সহায়ক মনিরুজ্জামান পার্শ্ববর্তি এলাকার লোক হওয়ায় তার সাথে গতবছরের ১৫ অক্টোবর একটি দলিল এক সপ্তাহের মধ্যে মিউটেশন করে দেওয়ার শর্তে ৩০হাজার টাকার ঘুষ লেনদেনের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী পরের দিন সোমবার বিকেলে স্থানীয় বোর্ড অফিস বাজারের পশ্চিমপাড়স্থ দোকানে বসে নগদ ২০হাজার টাকা দিয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ১মাস পরেও তার দলিল রেকর্ড হয়নি। বার বার কাজ করে দেওয়ার তাগাদা দিতে গেলে তার সাথে খারাপ আচরণ করে। একপর্যায়ে টাকা ফেরত চাইলে সে টাকাতো দিবেই না বরং উল্টো পুলিশ দিয়ে তাকে হয়রানীর হুমকি দেয়। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় বিভিন্ন জনের মাধ্যমে মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা ফেরত পেতে দেন-দরবারও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এ ভাবে ভ‚মি সংক্রান্ত কাজকর্ম করে দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে অনেকের কাছ থেকে প্রতারণার আশ্রয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ভুক্তভোগী নিরীহ সাধারণ মানুষ হয়রানীর ভয়ে কেউ মনিরের এহেন অপকর্মের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এতে সে (মনিরুজ্জামান) বেশী বেপরোয়া গতিতে নানা অপকর্ম চালিয়ে অবৈধ টাকার পাহার গড়ে তুলছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ভূপাতিত বিমানের সব অজানা তথ্য

তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান, ঘূষ-দূর্ণীতির পাশাপাশি থানা পুলিশের দালালী, শালিস বিচারের নামে সাধারন মানুষজনকে হয়রানী করছেন। নিয়মিত অফিসে না গিয়ে তার বাড়ির পার্শ্বে বোর্ড অফিস বাজার ব্রিজের উত্তরপার্শ্বের একটি চায়ের দোকানে দিনভর আড্ডায় লিপ্ত থাকেন এবং ওই চা দোকানেই এসব অনিয়ম-দূর্ণীতির আখড়া খুলে বসেছেন। প্রতারক মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়া এবং তার হয়রানী থেকে নিস্তার পেতে ইতোমধ্যে ভ‚মিমন্ত্রণালয়ের সচিব, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক গত ৯জানুয়ারী তারিখে অভিযোগটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মোবাইল ফোনে অভিযোগ গুলো পুরোপুরি বানোয়াট ও অসত্য দাবি করে বলেন, অভিযোগকারী একটি খারাপ লোক। তার সাথে আমার কোন দেখা-সাক্ষাতই নেই এবং লেনদেন ও হয়নি। আমাকে হেয় করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ইউএনও শঙ্কর কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে আছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দেশদর্পণ/জেইউ/এসজে