আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের আমলে ভোট চুরির সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাতার সফর নিয়ে সোমবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি। এরপর সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।

গত ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী কাতার সফর শেষে দেশে ফেরেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে ৪ মার্চ কাতার সফরে যান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দিবে; এটা তো আমাদেরই স্লোগান। জনগণের ভোট যাকে খুশি তাকে দিবে। আমাদের যে আন্দোলন আগাগোড়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য করেছি। জনগণের ভাতের অধিকার এবং ভোটের অধিকারের আন্দোলনও কিন্তু আমাদের করা। সেটা কিন্তু আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।

ইভিএম নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম নির্বাচনটা ডিজিলাট পদ্ধতিতে হোক। কিন্তু অনেকেই তা চায় না। কিছু কিছু মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের বিরোধিতা করছে। এখন এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয়। নির্বাচন কমিশন যতোটুকু পারে ততোটুকু করবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তারা নেবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন ছিলো তা সব করে দিয়েছি।

আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ এখন ভালো আছে। তারা বলছে, এই সরকার থাকলেই ভাল। কিন্তু নির্বাচনে মানুষ ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। এটি জনগণের ওপর নির্ভর করে।

নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেকগুলো এজেন্সি মুখিয়ে আছে। নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু হয় সেই উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। বিদ্যমান ব্যবস্থায় যে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে পারে তা আমরা প্রমাণ করেছি। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিতে পেরেছি।

নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনিও কিন্তু পোড় খাওয়া মানুষ। ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিবাদ করে জেল খেটেছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার সততা আছে। ব্যক্তিত্ব আছে। তিনি অবশ্যই একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের চেষ্টা করবেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে কাতার পাশে থাকবে। কাতার সফরকালে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানির সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আশ্বাস প্রদান করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা বা দাক্ষিণ্য চায় না। বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায়।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব, আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হব।

তিনি আরও বলেন, এই সম্মেলনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমি বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে আমি ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বিভিন্ন দাবি ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে কোভিড অতিমারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নেওয়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি।