প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুরক্ষা কামনায় রাখি বন্ধন পাঠিয়েছেন ভারতের মমতা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুরক্ষা কামনায় রাখি বন্ধন পাঠিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বুধবার (১০ আগষ্ট) বেলা ১ টার সময় বেনাপোল নো-ম্যান্সল্যান্ডে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ যশোর-১(শার্শা) আসনের এমপি আলহাজ¦ শেখ আফিল উদ্দিনের কাছে এ রাখি বন্ধন হস্তান্তর করেন। এসময় সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিনের মঙ্গল কামনায় রাখি বন্ধন পরিয়ে দেন গোপাল শেঠ।

আরো পড়ুন :
ভোলায় তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
থানচিতে ১০ স্কুলে সেইফ স্পেস উপকরণ বিতরণ

দু’দেশের সীমান্তরেখায় সৌহাদের এই আনন্দঘন পরিবেশে বনগা পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান জোৎআঢ্য বলেন, হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী এইদিন বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি বা রক্ষাসূত্র পরিয়ে তাঁর মঙ্গল ও সুরক্ষা কামনা করেন। আর ভাই বোনের হাতে উপহার তুলে দেন ও তাকে সারা জীবন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। রাখী হলো এমন এক সুতো যা দুটো আত্মাকে একটি আনন্দের বাঁধনে বেঁধে রাখে। ১১ অগাস্ট, রাখি বন্ধন উৎসব। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ভাই-বোনের এই প্রীতির উৎসব রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়।

ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা’ বনগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেট বলেন, বাংলা সবাইকে শেখায়, দু’বাংলার একদিকে শেখ হাসিনা অপর দিকে মমতা বন্দোপাধ্যায়। এই দুইজনার যে’ভাবনা; মহিলাদের স্বনির্ভর করতে হবে এবং তার মধ্যেই মানুষের কাছে বার্তা দিতে হবে সম্পদে-সম্প্রীতি; সমহৃতির বার্তা দিতে হবে। আমরা রাখি বন্ধন উৎসব দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, বঙ্গবন্ধু আন্দোলনকে সামনে নিয়ে সাম্প্রদায়িক যে বার্তা তৈরি হয়েছিলো সেটাকে থামিয়ে দিয়েছি এই রাখি রাখি বন্ধনের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনা এবং মমতা বন্দোপাধ্যয়কে সামনে রেখে “রাখি বন্ধন” ভারত বর্ষের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং জার্মানের চাঞ্ছেলর; এদের কাছে পাঠিয়েছি। আমাদের ১২ হাজার মেয়ে এ কাজে যুক্ত আছে। আজকের “রাখি” আমাদের প্রথম , আমরা ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রী, ভারত-বাংলাদেশের যে ভালবাসা, আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সীমান্তের সাংসদ আফিল উদ্দিনকে সকল সময় কাছে পাই; তাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই দুই দেশের সম্প্রীতির যে বার্তা; এক দেশকে আরেক দেশকে রক্ষা করার যে বার্তা; সেটা আমরা সমস্ত পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে দিলাম।

এসাথে তিনি আরো বলেন, আমাদের মেয়েরা আজকে কচুরিপানা দিয়ে ব্যাগ থেকে শুরু করে, মাদুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের প্রডাক্ট তৈরি করছে। এরপরে আফিল উদ্দিনের কাছে সেই ম্যাসেজ পাঠিয়ে দেবো। তাদের (বাংলাদেশের) মেয়েরাও যাতে স্বনির্ভর হতে পারে। যদি প্রয়োজন হয়; ওখানে কচুরিপানা নোনাজলে না হয়, আমরা এখান থেকে পৌঁছে দেব, সেখানকার মেয়েরাও স্বনির্ভর হোক। এইভাবে গড়ব দুই দেশের মেরুবন্ধন। আমরা হিন্দু মুসলিম, আমরা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। আমরা সেই বার্তাটাও দিচ্ছি। আমরা হানাহানি চাইনা, আমরা সমস্ত পৃথিবীর কাছে বার্তা দিচ্ছি, শান্তির বার্তা, সেখানে গিয়ে গড়ে উঠুক একদিকে শেখ হাসিনা আরেকদিকে মমতা বন্দোপাধ্যায়।

এসময় যশোর-(শার্শা)’র এমপি আলহাজ¦ শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, চমৎকার দিনে আপনারা চমৎকার একটি উপহার আমাদেরকে দিলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আপনাদের পুরস্কার স্বাদরে গ্রহণ করলাম। বনগা পৌরসভা কর্তৃক যারা আয়োজন করেছেন তাদের সকলকে আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। এই যে রাখি বন্ধন আসলে শুধু মাত্র রাখি দিয়ে শেষ হয়না; আসলে আমাদের বন্ধনটা এপার বাংলা এবং ওপার বাংলা। ভারত এবং বাংলাদেশের বন্ধনটা রাখির চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী বন্ধনে পরিণত হোক; আজকে এইটা তার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছি।

এসময় তিনি আরো বলেন, ভারতের মেয়েরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে আকর্ষণীয় করে তোলার সাথে সাথে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলল এবং আমরা আশা করি এইযে প্রাকৃতিক জিনিষগুলো আমরা যারা অবহেলা করি তা অনেক মুল্যবান সম্পদে পরিণত হোক তা আমি আশা করি। বাংলাদেশেও এখন অনেক কিছু আমরা তৈরি করি। অনেক ফেলে দেওয়া জিনিষ থেকে ভাল কিছু তৈরি করে আমরা বিশে^র বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করছি, বিশেস করে ইউরোপ কান্ট্রিতে রপ্তানি করছি। ভারত-বাংলাদেশের এ ধরনের শিল্পীরা যদি তাদের যৌথ উদ্যোগে একটি মেলা তৈরি করতে পারে। যদি আকর্ষণীয় ভাবে করতে পারে। যদি বিদেশীদের আকর্ষণীয় করতে পারে তবে, দুদেশের তৈরি করার যারা শিল্পী আছে তারাও অনেক উৎসাহিত হবে এবং দুদেশ মিলে উদ্যেগ নিলে আমরা রপ্তানিতে পৌঁছাতে পারবো।

এসময় বেনাপোল-পেট্রাপোল নো-ম্যান্সল্যান্ডে ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ পৌরসভার কাউন্সিলর দিপালী বিশ্বাস, শিখা ঘোষ, দিলিপ মজুমদার, প্রসনজিৎ বিশ্বাস, দেবদাস মন্ডল, বন্ধনা মুনসি, বন্ধনা দাস কির্তনিয়া, কৃষ্ণা রায়, শম্পা মোহন্তা, মৌসুমী চক্রবর্তী, অমিতাভ দাস অভিজিৎ কাপুরিয়া, রিতুপর্ণা আঢ্য, চিরঞ্জীত বিশ্বাস, শর্মীলা দাস বৈরাগী, নারায়ন ঘোষ, সুরোজিৎ দাস, সুকুমার রায় প্রমুখ।

বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবুল কালাম আযাদ, শার্শা উপজেলা যুবলীগৈর সভাপতি অহিদুজ্জামান অহিদ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম সরদার, সাধারণ সম্পাদক ইকবল হোসেন রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন রুবেল, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ¦ মনিরুজ্জামান ঘেনা, প্রচার সম্পাদক আকবার আলী, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আহাদুজ্জামান বকুল, যুবলীগ নেতা জসীম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম লালসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

আগষ্ট ১০,২০২২ at ২১:৩৬:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ দেপ/শই