টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার গাজীপুরের শ্রীপুরে চলন্তবাস থেকে স্বামীকে ফেলে দিয়ে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় পুলিশ তাকওয়া পরিবহনের চালক ও হেলপারসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধর্ষণের অভিযোগ এনে গতকাল শনিবার রাতে ওই নারী শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পাঁচ অভিযুক্ত গাজীপুরের তিন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এস এম শফিউল্লাহ গতকাল তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার রাকিব মোল্লা (২০) এবং সুমন হাসান (২২) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ ইশরাত জেনিফার জেরিনের আদালত, সুুমন খান (২০) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৪ জোবায়দা নাসরনি বর্ণার আদালত এবং সজীব (২১) ও শাহীন মিয়া (১৯) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ ইখলাস উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৫ আলীফা বেগমের আদালতে ভিকটিম নারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পুলিশ জানায়, নওগাঁ থেকে ওই নারী তার স্বামীকে নিয়ে একতা পরিবহনে শনিবার রাত ৩টার দিকে গাজীপুরের বোগড়া বাইপাস এলাকায়
আসেন। তারা সেখান থেকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার মাস্টারবাড়ী এলাকায় যাওয়ার জন্য যাত্রীবাহী পরিবহন খোঁজ করছিলেন। এ সময় তাকওয়া পরিবহন কোম্পানির ওই বাসটির চালক, হেলপার ও কনডাক্টর (গাজীপুর-জ ১১-০৩১১) মাস্টারবাড়ী যাওয়ার কথা বলে তাদের গাড়িতে তুলে। বাসটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় গিয়ে ওই নারী ও তার স্বামীকে রেখে সব যাত্রীকে নামিয়ে দেয়। পরে মাস্টারবাড়ী যাওয়ার পথে মাওনা চৌরাস্তা উড়ালসেতু এলাকায় ওই নারীর স্বামীকে পিটিয়ে জোরপূর্বক বাস থেকে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে বাসটি ঘুরিয়ে জয়দেবপুরের দিকে আসার সময় অভিযুক্তরা নারীর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, ব্যাগ, নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিছুদূর এগিয়ে ভাওয়ালের শালবন রাজেন্দ্রপুর এলাকায় ওই নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
এসপি এ এস এম শফিউল্লাহ জানান, ওই নারীর স্বামীকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়ার পর তিনি শ্রীপুর থানা পুলিশকে এ ঘটনা জানান এবং পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে। এদিকে ওই নারীকে রাজেন্দ্রপুর এলাকায় নামানোর পর তিনি সড়কে কর্তব্যরত গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের শরণাপন্ন হন। মেট্রোপলিটন জেলা পুলিশকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক তার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন। জেলা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে সড়কের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিুক্তদের ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় ভিকটিম বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। নির্যাতিতা নারীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
আগষ্ট ০৭,২০২২ at ১৮:৪০:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/রাহা/শই
