বাংলাদেশ শাসনের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ।

মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে বিদেশিদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকদের প্রতিও অসন্তুষ্ট তিনি।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে পরিচালনার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সমস্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন, বাংলাদেশ সম্পর্কে নয়। বুধবার ইউরোপ সফরে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেনকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মহসিন রেজা এসব তথ্য জানান।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা কি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্নগুলো করবেন, কেন তারা তাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করতে পারে না? পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে জনসংযোগ কর্মকর্তার প্রচারিত বার্তামতে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ মার্কিন নাগরিক নিখোঁজ হয়, এমনকি মার্কিন শিশুদের তাদের হিস্পানিক বা স্পেইনদেশীয় পিতামাতাদের সঙ্গে মিলিত হতে দেয়া হয় না।

গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিক্যাব টকে অংশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন। তিনি অংশগ্রহণমূলক আন্তর্জাতিকমানের জাতীয় নির্বাচন প্রত্যাশা করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কৌশল নিয়েও কথা বলেন তিনি। পিটার ডি হাসের এসব কথার জবাবে মন্ত্রীর পক্ষে গণমাধ্যমে বার্তা পাঠান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মহসিন রেজা।

বার্তায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র যদি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চায়, তবে কেন রাশিয়ার আরটি টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে? দ্বিতীয়ত, তারা যদি জবাবদিহি চায়, তাহলে কেন প্রতি বছর হাজারো মার্কিন নাগরিক হত্যার জন্য নিজেদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বা পুলিশের জবাবদিহি ও শাস্তি নিশ্চিত করা হয় না? হত্যা

হওয়া বেশির ভাগ কালো ও হিস্পানিক নাগরিক। আপনারা কেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এ প্রশ্নগুলো করেন না?

মার্কিন নির্বাচন নিয়ে আবদুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি স্বচ্ছ হয়, তবে কেন তরুণ মার্কিনিদের দেশটির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা নেই? তরুণ মার্কিনরা ঠিকমতো ভোটই দেয় না। কেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি নির্বাচনে গড়ে মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে? যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রক্রিয়া কি অংশগ্রহণমূলক? সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ইস্যুগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশকে নিয়ে নয়। আমাদের এই দেশকে শাসন বা সাহায্য, উন্নতি করতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য নয়।

জুন ০২,২০২২ at ০৬:৫৮:০০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আক/ভকা/রারি